দাবি না মানলে পুলিশকে সব গাড়ি বুঝিয়ে দেবেন মালিকরা
পুলিশের হয়রানি বন্ধসহ ১১ দফা দাবিতে চট্টগ্রামে চলছে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট। তবে প্রশাসন চাইলে নগর ভবনে সিটি করপোরেশনের মেয়রের মধ্যস্থতায় আলোচনায় বসতে আগ্রহী মেট্রোপলিটন গণপরিবহন বাস মালিক সংগ্রাম পরিষদ।
আজ রোববার ধর্মঘট চলাকালে নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ ঘোষণা দেন সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক বেলায়েত হোসেন। এ ছাড়া আজকের মধ্যে নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে আটক গণপরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের মুক্তি দেওয়া না হলে আগামীকাল সোমবার লালদীঘি ময়দানে বৈধ সব যানবাহন পুলিশ কমিশনারের কাছে হস্তান্তরের ঘোষণাও দেন এই নেতা।
বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘যদি বিকেল ৫টার মধ্যে তাদের ছেড়ে দেওয়া না হয় আগামীকালকে আমরা বৈধ পারমিটধারীর গাড়ির মালিক যারা আছি আমাদের গাড়ি নিয়ে আমরা লালদীঘির পাড়ে পুলিশ কমিশনার মহোদয়কে আমাদের গাড়িগুলো আমরা বুঝিয়ে দেব। আমরা গাড়ি চালাব না রোডে, যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি মানা না হবে।’
আজ সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন সড়কে মেট্রোপলিটন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারে মোট ছয়টি সংগঠন এই ধর্মঘট শুরু করে।
ধর্মঘট চলাকালে নগরীর কর্ণফুলী শাহ আমানত ব্রিজ, ডবলমুরিং, ইপিজেডসহ বিভিন্ন এলাকায় পিকেটিং করার সময় ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধর্মঘটের সমর্থনে নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় সমাবেশ করে মেট্রোপলিটন গণপরিবহন বাস মালিক সংগ্রাম পরিষদ।
বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম চৌধুরী জানান, ২০ থেকে ৩০ জন মালিক শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মুক্তির পাশাপাশি ১১ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও জানান তিনি।
মেট্রোপলিটন গণপরিবহন বাস মালিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক বেলায়েত হোসেন বলেন, ছয় মাস আগে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে পুলিশের হয়রানি বন্ধসহ ১১ দফা দাবি নিয়ে বৈঠক করেছিলেন তাঁরা। এসব দাবি আদায়ে পুলিশ কমিশনার আশ্বাস দিলেও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মালিক শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার অব্যাহত রেখেছেন। এসব কারণেই গত ২৫ নভেম্বর আলটিমেটাম দেন তাঁরা। এরপরও গতকাল শনিবারের মধ্যে দাবি মেনে না নেওয়ায় আজ থেকে ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করতে শুরু করেছেন তাঁরা।
পুলিশ কিছু রুটপারমিট বিহীন গাড়ি রাস্তায় বের করে মেট্রোপলিটন গণপরিবহন বাস মালিক সংগ্রাম পরিষদের দাবি আদায়ে বিঘ্ন সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন বেলায়েত হোসেন। তিনি বলেন, পুলিশ যদি মনে করে অবৈধ গাড়ি দিয়ে জনগণের দুর্দশা লাঘব করতে পারবে, তাহলে তাঁদের পরিষদের মালিক সদস্যরা সব বৈধ গাড়ি পুলিশকে দিয়ে দেবেন।
এদিকে ধর্মঘটের কারণে গণপরিবহন না পেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে নগরবাসীকে।
জামাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি জানান, ধর্মঘটের কারণে গণপরিবহন নেই। দুই একটা বাস যাও চলছে সেগুলোও বাড়তি ভাড়া আদায় করছে। দীর্ঘক্ষণ গাড়ি না পেয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
জেসমিন আকতার নামের কলেজ শিক্ষার্থী জানান, কলেজে আজ তাঁর পরীক্ষা। কিন্তু যাওয়ার জন্য কোনো বাহন পাচ্ছেন না। বাসের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করছেন। হিউম্যান হলার বা টেম্পুর মতো বেশ কয়েক ধরনের ছোট গাড়ি চলাচল করলেও তাতে নারী বা বয়স্করা উঠতে পারছে না।