‘ভুয়া পেজে’ স্ট্যাটাস, আসিফ নজরুলের নামে মামলা, সমন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মাদারীপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৫০০ ও ৫০১ ধারায় মামলাটি করেন নৌমন্ত্রীর চাচাতো ভাই ও জেলা পরিষদের সদস্য ফারুক খান।
এ বিষয়ে ড. আসিফ নজরুল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, যে ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সেটি তাঁর নয়। এটি একটি ভুয়া পেজ। তাঁর আসল পেজে তিনি এ ধরনের কোনো মন্তব্য করেননি।
মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট ওবাইদুর রহমান খান জানান, বিবাদী নজরুল ইসলাম ওরফে ড. আসিফ নজরুল তাঁর ফেসবুক আইডিতে দেওয়া স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেছেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়োগ পরীক্ষায় ৯২ জন উত্তীর্ণ হয়েছে, যার মধ্যে ৯০ জন নৌপরিবহনমন্ত্রীর এলাকা মাদারীপুরের বাসিন্দা। অথচ উনি চাইলে ৯২ জনই ওনার এলাকার লোক হতে পারত। দুজন ভিন্ন এলাকার লোক নিয়োগ দিয়ে উনি সততার যে দৃষ্টান্ত দেখালেন, তা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’ এতে নৌমন্ত্রীর সম্মানহানি হয়েছে উল্লেখ করে ফারুক খান তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মাদারীপুর চিফ জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন মামলাটি গ্রহণ করে সমন জারি করেছেন।
এর আগে এ ঘটনায় তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারায় মামলার করার জন্য গত মঙ্গলবার নৌমন্ত্রীর ভাগ্নে সৈয়দ আসাদ উজ্জামান মিনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আবেদন করলে তা গৃহীত হয়নি। পরে আজ আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে মাদারীপুর সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়। যা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আদেশের জন্যে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, বন্দরে নিয়োগের ঘটনা নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান সংসদকে জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম বন্দরে লস্কর পদে ৯২ জন নয়, চাকরি দেওয়া হয়েছে ৮৫ জনকে। চাকরির বিধান অনুযায়ী এবং কোটা অনুসরণ করে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বৃহত্তর চট্টগ্রামের ২৯ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ২৩ জন, কক্সবাজারের চারজন, পার্বত্য চট্টগ্রামের দুজন। এ ছাড়া নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, চাঁদপুর, গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার মানুষ চাকরি পেয়েছেন। জেলা কোটার কথা যদি আসে, তবে আগামী ৩০ বছরের মধ্যেও চট্টগ্রামের কোনো কোটায় চাকরি পাওয়ার কথা নয়। তারপরও বন্দর যেহেতু চট্টগ্রামে, তাই চট্টগ্রামের বিষয়টি জেলা কোটায় ফেলা হয় না।
রাতে ড. আসিফ নজরুল বলেন, তাঁর নামে কয়েকটি ভুয়া ফেসবুক পেজ রয়েছে। তিনি যে পেজ পরিচালনা করেন, সেটার প্রফাইল পিকচার হিসেবে তাঁর এক মেয়ের সঙ্গে ছবি রয়েছে। এ ছাড়া একটি ফেসবুক অ্যাকাউটে দুই মেয়ের ছবি এবং কাভার ফটো হিসেবে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ছবি রয়েছে।
গতকাল বুধবার ঢাবি অধ্যাপক তাঁর ফেসবুক পেজে বলেন, ‘I posted the following status In June of this year. Posting it again. Please be aware of my fake identities.
নিচে তিনটি ছবি আছে। যে ছবিটিতে আমি আমার মেয়েকে ধরে আছি শুধু সেটি আমার নিজের পরিচালিত ফ্যানপেজ। বাকি দুটো ছবি ব্যবহার করে যে দুটো ফেসবুক পেজ পরিচালিত হচ্ছে তা আমার অনুমতি নিয়ে করা হয়নি। এরকম অনুমতিবিহীন আরো ফ্যানপেজ থাকতে পারে। কিন্তু এসব পেজ-এ কোনো সংবাদ, মন্তব্য, ছবি বা অন্য কোনো প্রকাশনার সঙ্গে আমার কোনোরকম সংশ্লিষ্টতা নাই।
এ নিয়ে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না আশা করি।’