রূপপুর পরমাণু প্রকল্পে কাজ শুরু
পাবনার রূপপুরে প্রস্তাবিত দুই হাজার মেগাওয়াট পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের শীতলীকরণ টাওয়ারের নকশা তৈরি শুরু করেছে রাশিয়ার একটি বিশেষজ্ঞ দল।
কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানিয়েছে, রূপপুরে পরমাণু প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে রাশিয়ার সরকারি পরমাণু সংস্থা রসঅ্যাটম। তাদের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান অ্যাটমপ্রোয়েক্ট-এর বিশেষজ্ঞ দল এখন বাংলাদেশে। তাঁরা পরমাণু প্রকল্পের শীতলীকরণ টাওয়ার ব্যবস্থা নিয়ে কাজ শুরু করেছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শীতলীকরণ টাওয়ার পরমাণু প্রকল্পের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞ দল এখন দুই ধরনের শীতলীকরণ টাওয়ারের প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক দিকগুলো খতিয়ে দেখছে। একটি হলো প্রাকৃতিক গঠনগত (ন্যাচারাল ড্রাফট) এবং অন্যটি বায়ুচলননির্ভর (ভেন্টিলেশন)।
সাধারণত ন্যাচারাল ড্রাফট শীতলীকরণ টাওয়ার ১৮০ মিটার উঁচু হয়। প্রতি ঘণ্টায় একটি টাওয়ার এক লাখ ৭০ হাজার ঘনমিটার পানি ঠান্ডা করে। তবে ভেন্টিলেশন সিস্টেমের শীতলীকরণ টাওয়ারে পানি ঠান্ডা হওয়ার হার বেশি।
রসঅ্যাটমের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এর আগে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের টারবাইন কনডেন্সোর শীতলীকরণ ব্যবস্থার ভেন্টিলেশন সিস্টেম শীতলীকরণ টাওয়ার ব্যবহার করা হয়নি। কারণ, এ পদ্ধতিতে টাওয়ার বেশি সংখ্যায় বসাতে হয় এবং ফ্যানের মোটর চালাতে প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের মতো উচ্চ তাপমাত্রা ও আর্দ্রতাসমৃদ্ধ পরিবেশের অঞ্চলে ভেন্টিলেশন সিস্টেম শীতলীকরণ টাওয়ার তৈরি করাই যুক্তিযুক্ত। অ্যাটমপ্রোয়েক্টের প্রকৌশলী ও নকশাবিদরা রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ভেন্টিলেশন সিস্টেম শীতলীকরণ টাওয়ার ব্যবস্থার নকশার কাজ করছেন।
রাশিয়া প্রথমবারের মতো ভেন্টিলেশন সিস্টেমের শীতলীকরণ টাওয়ার ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে। এর আগে পরমাণু স্থাপনায় অনেক ক্ষেত্রেই তারা ‘স্প্রে পন্ড’ ব্যবহার করত। স্প্রে পন্ড ব্যবস্থায় একটি জলাশয়ের ওপর ছড়িয়ে রাখা ধাতব নলের মাধ্যমে পারমাণবিক স্থাপনায় সৃষ্ট গরম পানি ছিটিয়ে দেওয়া হয়। এতে প্রথমে বাতাস ও পরে ঠান্ডা পানিতে উষ্ণ পানি শীতল হয়।
রসঅ্যাটমের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভেন্টিলেশন টাওয়ার ব্যবস্থায় অন্য শীতলীকরণ ব্যবস্থার চেয়ে কম স্থান প্রয়োজন হয়। আর এ ব্যবস্থায় পানি ঠান্ডা হওয়ার হারও হয় বেশি।
অ্যাটমপ্রোয়েক্ট এর আগে রাশিয়া ও রাশিয়ার বাইরে একশর বেশি শীতলীকরণ টাওয়ার তৈরি করেছে। বর্তমানে বেলারুশে তারা পরমাণু বিদ্যুৎ স্থাপনা নির্মাণের কাজ করছে।