জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শেষ, মিলল এসিড-অস্ত্র-গুলি
যশোর সদর উপজেলায় ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযান শেষ করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
সোমবার রাত পৌনে ৮টার দিকে উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের পাগলাদহ মাঠপাড়া গ্রামের মোজাফফর হোসেনের বাড়িতে অভিযান শুরু হয়। তা শেষ হয় রাত ১০টা ১০ মিনিটে।
অভিযান শেষে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আনিসুর রহমান জানান, নব্য জামা’আতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) যশোর অঞ্চলের সংগঠক মোজাফ্ফর হোসেনকে সোমবার দিনের কোনো এক সময় যশোর শহর থেকে আটক করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুয়ায়ী, সন্ধ্যার পর তাঁর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। তাঁর বাড়িটি ছিল জঙ্গিদের নিরাপদ আস্তানা।
‘এ সময় বাড়ি থেকে ৫০টি গ্রেনেড তৈরির সরঞ্জাম, ২৫টি এক্সপ্লোসিভ জেল, পাঁচ লিটার এসিড, একটি বিদেশি পিস্তল, তিনটি ম্যাগজিন, চারটি গুলি, তিনটা ছুরি, ৫৭টি সার্কিট, গ্রেনেড সুইচ ৫০টি, বোমা তৈরির বেশ কিছু উপকরণসহ ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।’
এ ঘটনায় কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের হবে বলে জানান এসপি।
রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, বিরামপুর-পাগলাদহ গ্রামের সংযোগ সৃষ্টিকারী ব্রিজের কাছাকাছি ভৈরব নদের তীরে ওই বাড়িটির অবস্থান। বাড়িটি আধাপাকা। তখন ঘটনাস্থলে এসপি আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা অবস্থান করছিলেন। সংবাদকর্মীরা বাড়ি থেকে খানিকটা দূরে অবস্থান নিয়েছিলেন।
পুলিশের সাতটি টিম এ অভিযানে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর, কাউন্টার টেরিজম ইউনিট, সোয়াত, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ বগুড়া ও যশোর জেলা পুলিশ।
মোজাফফরের প্রতিবেশী সাইদুর রহমান জানান, মোজাফফর হোসেন তিন কক্ষের বাড়িতে স্ত্রী ও তিনি মেয়ে নিয়ে প্রায় ১৪ বছর ধরে থাকেন। বাড়িতে কোনো ভাড়াটিয়া নেই। মোজাফফর এম এম কলেজ পুরাতন ছাত্রাবাস মসজিদে ৭-৮ বছর ধরে ইমামতি করেন। তাঁর স্ত্রী রাজিয়া বেগম বাড়িতেই দর্জির কাজ করেন। বড় মেয়ে হাবিবা (১৮) বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে থাকেন। এখন স্ত্রী ও অপর দুই মেয়ে ফারজানা (১৪) ও নাইমাকে (১২) নিয়ে এই বাড়িতে থাকেন মোজাফফর হোসেন।
প্রতিবেশীরা জানান, মোজাফফর হোসেনের জঙ্গি কার্যক্রম বা সন্দেহজনক কোনো আচরণের তথ্য তাদের জানা ছিল না। তবে মোজাফফরের দুই শ্যালক রঞ্জু ও জনি ছাড়া তেমন কাউকে এ বাড়িতে আসা-যাওয়া করতে দেখা যায়নি। কিছুদিন আগে তাঁরা ঢাকায় গিয়েছেন বলে শুনেছেন, তবে আজ তাঁরা নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন।