সাজানো ছবির সঙ্গে রশিদ জড়িত নন, দাবি ছেলের
দুই শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত না থেকেও কেবল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বৃদ্ধ আবদুর রশীদ গাইনকে সংশ্লিষ্ট মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর ছেলে।
আজ বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে আবদুর রশীদের ছেলে মাহমুদুর রহমান বলেন, বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য ‘ছবি বানানোর’ মামলায় তাঁর বাবাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মাহমুদুর আরো বলেন, ‘দুটি শিশুকে বেঁধে নির্যাতনের পর ফের তাদের ভিন্ন একটি গাছের সাথে বেঁধে ছবি তোলার ঘটনার সঙ্গে আমার বৃদ্ধ ও অর্ধপঙ্গু বাবা জড়িত নন। তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে ওই মামলার তিন নম্বর আসামি হয়েছেন।’
দুটি শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে ‘সাজানো ছবি’ তৈরি করে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে গত রোববার রাতে জয়নগর গ্রামের আনিছুর রহমান স্বউদ্যোগে বাদী হয়ে তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি আইনের ৫৭(১) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর ৪২)।
মামলার আসামিরা হলেন উপজেলার বাদঘাটা গ্রামের কলেজ শিক্ষক ও স্থানীয় সাংবাদিক সামিউল মনির, গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা সাংবাদিক রবিউল ইসলাম, গোপালপুর গ্রামের আবদুর রশিদ ও জয়নগর গ্রামের ইউনুছ গাজী।
তবে সে মামলায় ছবির দুই শিশুর বাবা ও চাচা- এ তিনজনের কাউকেই আসামি করা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুর রহমান লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি বলেন, রশীদ গাইন ২০০৯ সালে স্ত্রী রেহানা বেগমের নামে ১৫ কাঠা জমি কিনেন। সেখানে ঘর ও দোকান তৈরি করে তাঁরা বসবাস করছেন।
এই জমি সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা এইচ এম গোলাম রেজা কিনে নিতে চাইলেও রশিদ তাতে সম্মত হননি। এরপর থেকে গোলাম রেজা তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। মামলার বাদী গাজী আনিসুর রহমান স্থানীয় যুব সংহতির নেতা এবং গোলাম রেজার ঘনিষ্ঠজন। তাঁরাই যোগসাজশ করে রশিদ গাইনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বলে দাবি মাহমুদুর রহমানের।
আবদুর রশিদ গাইনের ছেলে আরো বলেন, ‘এসবের জের হিসেবে আমাকে ও আমার বাবা আবদুর রশিদের বিরুদ্ধে প্রতিবেশী চাচি পরিচয়ের এক নারীকে দিয়ে একটি ধর্ষণ মামলা করানো হয়েছিল। মামলাটি পরে তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় আদালত বাদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।’
সম্প্রতি রশিদ গাইনকে একটি পাচার মামলার আসামি করা হয়। এই অভিযোগও সত্য নয় নিশ্চিত করে গত ৭ জুলাই পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় বলে জানান মাহমুদুর রহমান।
এ দিকে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে মামলার বাদী গাজী আনিসুর রহমানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
তবে মামলার ব্যাপারে গত মঙ্গলবার বাদী আনিসুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেছিলেন, ‘রশিদ গাইন শিশু ইয়াসিনের বাবা ইসমাইলের খুবই ঘনিষ্ঠ। সেই ইসমাইলকে কুপরামর্শ দিয়ে ছবি তৈরি করেছে। সেই মূল নায়ক। তা ছাড়া ইউনুস গাজীর সাথেও ইসমাইলের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। এতে আমার ধারণা হয়েছে, তাঁরা দুজনেই জড়িত।’
জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা এইচ এম গোলাম রেজা রাতে এনটিভি অনলাইনকে জানান, এ ঘটনার সাথে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। প্রতিবেশী এক নারীর সাথে রশিদের জমি সংক্রান্ত ঝামেলা রয়েছে। তার জেরে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করেন তিনি।