বলাৎকারে ব্যর্থ হয়ে মাদ্রাসাছাত্রকে হত্যা!
বলাৎকার করতে ব্যর্থ হয়ে ১৩ বছর বয়সী এক মাদ্রাসাছাত্রকে গলা টিপে হত্যা করে বস্তাবন্দি লাশ নদীতে ফেলে দিয়েছেন এক মাদ্রাসার শিক্ষক ও ইমাম। শুধু তাই নয়, বিকৃত যৌনাচারের জন্য ওই ইমাম নিয়মিত ব্যয় করেন হাজার হাজার টাকা। শিশু ছেলেদের জোগাড় করে দিতে তাঁর রয়েছে একাধিক সরবরাহকারী।
আজ রোববার সকালে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য দেয় পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ রাকিব খান, সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি সার্কেল) কামরুল ইসলাম, ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুখলেছুর রহমান, পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাজহারুল ইসলাম।
হত্যার শিকার জাসিমুর রহমান জাসিম ভৈরব পৌর শহরের কমলপুর জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসার হেফ্জ বিভাগে পড়ত। আর জাসিম হত্যায় গ্রেপ্তার হওয়া মো. খোরশেদ আলম ওরফে মুছা (৩৮) চট্টগ্রাম খুলশী থানাধীন লালখান বাজারের আমীন সেন্টার এবাদতখানার ইমাম। তিনি একই সঙ্গে লালখান এলাকার সাতকানিয়া কলোনি মাদ্রাসার শিক্ষক।
ইমাম মুছা গতকাল শনিবার কিশোরগঞ্জের প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে জাসিমকে খুন করাসহ তাঁর নানা অপকর্মের কথা স্বীকার করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা। বর্তমানে ওই ইমাম আদালতের নির্দেশে জেলহাজতে আছেন।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পুলিশ কর্মকর্তাদের সংবাদ সম্মেলন। ছবি : এনটিভি
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মাদ্রাসাছাত্র জাসিম গত ১৬ সেপ্টেম্বর ভৈরব থেকে নিখোঁজ হয়। এরপর ২১ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ জাসিমের বড় ভাই মো. নাইমুল ইসলামের মোবাইল ফোনে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে কয়েকবার ফোন আসে। ফোনের সূত্র ধরে ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে ঢাকার যাত্রাবাড়ীর তা’মীরুল মিল্লাত মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্র মোতাছিম বিল্লাহ সাকিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুসারে অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ইমাম মুছাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, সাকিবের সঙ্গে মুছার বিকৃত যৌন সম্পর্ক রয়েছে। তা ছাড়া মুছাকে নানা সময়ে সাকিব শিশু সরবরাহ করত। জাসিম ভৈরব থেকে রাগ করে ঘুরতে ঘুরতে চট্টগ্রামে চলে যায়। চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে সাকিবের সঙ্গে জাসিমের পরিচয় হয়। সাকিব জাসিমকে মুছার বাসায় নিয়ে যায়।
আদালতে দেওয়া মুছার জবানবন্দির বরাতে পুলিশ জানায়, ২১ সেপ্টেম্বর ইমাম মুছা তাঁর চট্টগ্রামের বাসায় ভৈরবের মাদ্রাসাছাত্র জাসিমকে কয়েকবার বলাৎকার করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে তাকে গলা টিপে হত্যা করেন মুছা। পরে ওই দিন বিকেল ৪টার দিকে জাসিমের লাশ বস্তাবন্দি করে ব্রিজ থেকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দেন।