বিএনপি করায় উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণ
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদে বিএনপি থেকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সুমনকে অপসারণ এবং উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের বড়বাজার এলাকার আজহার ভবনে সাইফুল ইসলাম নিজেই এই সংবাদ সম্মেলন করেন। সাইফুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ জেলা যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক।
লিখিত বক্তব্যে সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের অবৈধ অপসারণ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে তাঁর করা রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট সরকারকে দুই সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং রিট নিষ্পত্তির আগে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদটিকে শূন্য না করার জন্য একটি রুল জারি করেন। কিন্তু রিট নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকলেও স্থানীয় সরকার বিভাগ পদটিকে শূন্য ঘোষণা করে। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন এই পদে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে হাইকোর্টের রুল অমান্য করেছে।
সাইফুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে এমনটি করা হচ্ছে। হাইকোর্টের রিট উপেক্ষা করে আমার পদটিকে শূন্য ঘোষণা ও নির্বাচন কমিশন কর্তৃক উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা উভয়ই হাইকোর্টের রুলের অবমাননা ও আইনের শাসনের পরিপন্থী কাজ।
সাইফুল ইসলাম সুমন আরো বলেন, তিনি নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহলের প্ররোচণায় উপজেলা পরিষদের সদস্য, ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যানরা কৌশলে তাঁকে অসহযোগিতা করতে থাকেন। তারা নানাভাবে তাঁকে ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা করতে থাকেন। এমনকি রেজুলেশন ছাড়াই নানা প্রকল্পের বরাদ্দ দিতে ইউপি চেয়ারম্যান তাঁকে চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যানদের অনৈতিক দাবির কাছে নতিস্বীকার না করার কারণে তাঁরা গোপন সভা করে সুমনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন।
এরপর একজন প্রভাবশালী প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে ঢাকার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) উপজেলা চেয়ারম্যান সুমনকে কৈফিয়ত তলব করেন। কৈফিয়তের জবাব দেওয়ার পরও তিনি মনগড়া তদন্ত করে সুমনকে অপসারণের সুপারিশ করে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ শে মে তাঁকে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণ ও পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয় বলে তিনি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি আইনজীবী শরীফুল ইসলাম শরীফ, জেলা বিএনপির সহসভাপতি আলী মোহাম্মদ, আজিজুল ইসলাম দুলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল আলম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সালাহ উদ্দিন বাচ্চু উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করে। ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী, প্রার্থীদের মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ ৮ অক্টোবর, বাছাই ১০ অক্টোবর, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ১৭ অক্টোবর এবং ৪ নভেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
জেলা প্রশাসকের স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিএনপি থেকে নির্বাচিত করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সুমনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে পরিষদের সদস্যদের গৃহীত অনাস্থা প্রস্তাবের ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ তাঁকে বরাখাস্ত করে গত ২৩ মে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোশারফ হোসেনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে আমরা তফশিলের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। আগামী ২ অক্টোবর রিটের শুনানি হবে। যখন যে নির্দেশ আসবে তা মেনেই কাজ করব।’