‘আগুন নেভানোর ব্যবস্থা ছিল না, ভবনটিও অবৈধ’
মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলার মুক্তারপুর এলাকায় আইডিয়াল টেক্সটাইল মিলে আগুন প্রতিরোধ ব্যবস্থায় ত্রুটি ছিল। ছয়তলার ওই মিলে সিঁড়িগুলো দিয়ে উঠা-নামার জন্য নেই পর্যাপ্ত জায়গা। অপর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র, শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের অভাব ছিল। এ ছাড়া আগুন লাগলে তৎক্ষণিক ব্যবহারের জন্য বিকল্প সিঁড়িও ছিল না।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এ তথ্য দেয়। আজ বুধবার সকালে ওই মিলে আগুন লাগে। এতে ছয় শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হয়।
ঢাকা বিভাগের ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন জানান, প্রত্যেক কারখানাতে অগ্নিকাণ্ড মোকাবিলায় পূর্ব পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র, বিকল্প সিঁড়ির ব্যবস্থা, শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ, আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিটি তলাতে পানির ব্যবস্থা রাখা জরুরি। এ ছাড়া ‘ফায়ার অ্যালার্ম’সহ পর্যাপ্ত ব্যবস্থার কিছুই ছিল না মিলটিতে। এসব আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রাখা হলে হতাহতের সংখ্যা কমে আসত।
মুন্সীগঞ্জের ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সের পরিদর্শক মো. ইউসুফ বলেন, ‘পুরাতন টিনশেড ফ্যাক্টরির অনুমোদন থাকলেও পাশে অবস্থিত আগুন লাগা ছয়তলা ভবনটি লাইসেন্সের আওতায় ছিল না। এ ছাড়া বিকল্প সিঁড়ির ব্যবস্থা ও প্রতিটি তলাতে পানির ব্যবস্থা না থাকায় লাইসেন্সের আবেদন জানালেও আমরা অনুমোদন দেইনি। তারা অবৈধভাবে এই ছয়তলা ভবনে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল।’
মুন্সীগঞ্জের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শকরিদর্শক জুলিয়া জেসমিন বলেন, ‘মালিকপক্ষ ছয়তলা ভবনে অবৈধভাবে মিলের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। ভবনটি শ্রমিকদের খাবার রুম, প্রিন্টিং এবং গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করত। ১৫ দিন আগেও সরেজমিনে গিয়ে কর্মকর্তারা এই ভবন পরিদর্শন করেছেন, কিন্তু সেখানে ফ্যাক্টরির কোনো কাজ চলছিল না। হঠাৎ করেই তারা গোপনে গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করে আসছে, যা আমাদের অগোচরে।’
মিলটি এখন পুলিশ ঘিরে রেখেছে। এ ছাড়া এই ঘটনায় জেলার অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম শওকত আলম মজুমদারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।