পাটুরিয়ায় বাস সংকটে যাত্রীদের দুর্ভোগ
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার প্রবেশপথ মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটে আজ শুক্রবার সকাল থেকে কর্মস্থলমুখী মানুষের উপচে পড়া ভিড় শুরু হয়েছে। দুপুরে যাত্রীদের এই চাপ ব্যাপক আকার ধারণ করে।
এসব যাত্রী বাসসহ বিভিন্ন পরিবহনে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে লঞ্চে, ফেরিতে ও কিছু ট্রলারে করে পদ্মা নদী পার হয়ে পাটুরিয়া ঘাটে আসেন। একসঙ্গে বাড়তি যাত্রীর কারণে পাটুরিয়া-গাবতলী সড়কে সরাসরি চলাচলকারী বাসের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাস টার্মিনালসহ আশপাশে অপেক্ষা করে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়ায় গন্তব্যে রওনা দিতে পারছেন কেউ কেউ। এতে হাজারো সাধারণ যাত্রীর পাশাপাশি শিশু-বৃদ্ধরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
পরিবহন ও টার্মিনালে কর্মরত শ্রমিকরা জানান, প্রতিদিন পাটুরিয়া থেকে গাবতলী সরাসরি বিআরটিসি, পদ্মা লাইন, এনএনবি ও যাত্রীসেবার প্রায় ২০০ বাস চলাচল করে। এসব বাসেই যাত্রীদের স্বাভাবিকভাবে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়। ঈদের পর যাত্রীরা নির্বিঘ্নে পাটুরিয়া থেকে যার যার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন। বাড়তি কোনো চাপ ছিল না। কিন্তু আজ শুক্রবার সকাল ১০টা থেকেই যাত্রীদের চাপ শুরু হয়েছে। জুমার নামাজের পর তা বেড়েছে ব্যাপক হারে। পাটুরিয়া থেকে ঢাকায় যাত্রী নামিয়ে দিয়ে অনেক বাস খালি ফিরে আসছে আবার যাত্রী নিতে।
বাস কাউন্টারগুলোর সুপারভাইজাররা জানান, একসঙ্গে অনেকগুলো বাস যাত্রীবোঝাই করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিচ্ছে। এভাবে যেতে যেতে টার্মিনালে বাস সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। যেসব বাস ছেড়ে যাচ্ছে, সেগুলো যাত্রী নামিয়ে দিয়ে একসঙ্গে পর্যায়ক্রমে পাটুরিয়া ঘাটে ফিরে এলে বাস সংকট থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তাঁরা।
তা ছাড়া অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে সরাসরি কেউ কথা বলতে রাজি হননি। তবে কয়েকজন পরিবহন শ্রমিক জানিয়েছেন, পাটুরিয়া ঘাট থেকে ঢাকায় যাত্রী নামিয়ে দিয়ে খালি বাস নিয়ে ফিরে আসতে হচ্ছে। এ কারণে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কিছু টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে।
যাত্রীরা জানান, ঈদের লম্বা ছুটি কাটিয়ে অনেকে এখন ঢাকা, সাভার, নবীনগরসহ আশপাশে এলাকায় কর্মস্থলে যোগ দিচ্ছেন। কেউ কেউ সরকারি ছুটি কাটিয়ে কয়েকদিন আগে স্ত্রী-সন্তান বাড়ি রেখে নিজেরা অফিস শুরু করেন। শুক্রবার যাত্রীদের চাপ কম থাকবে এই আশায় অনেকে বাড়ি গিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে আজ ফিরছেন। এখন ঘাটে এসে বাস পাওয়া যাচ্ছে না।
কোনো বাসে উঠতে গেলেই জনপ্রতি ছাদে ১৫০ টাকা ও ভেতরে ২০০ টাকা করে ভাড়া দিতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।
পাটুরিয়া ফেরিঘাটে দায়িত্বরত পুলিশ পরিদর্শক (ট্রাফিক) আনোয়ার হোসেন জানান, ফেরিতে দূরপাল্লার বাসসহ যানবাহন পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে। ভিড় পড়েছে শুধু কাটা গাড়ির যাত্রীর (ফেরি ও লঞ্চযাত্রী)। বাস সংকটের কারণে কেউ কেউ গোপনে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যাত্রীরা সুনির্দিষ্ট করে অভিযোগ দিলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।