ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে এমপি আহত, স্টেশন মাস্টার বরখাস্ত
স্ত্রীকে তুলে দিয়ে চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) তানভীর ইমাম পড়ে যাওয়ার ঘটনায় উল্লাপাড়ার স্টেশন মাস্টার সামছুল আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার রাতে পাকশীর বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) অসীম কুমার তালুকদারের নির্দেশে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
সংসদ সদস্য ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়ার পর তাঁর সমর্থকরা সহকারী স্টেশন মাস্টার আবদুল বাতেনকে মারধর করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে, ঘটনা দুটি তদন্তে পাকশী রেলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন ও পরিবহন কর্মকর্তাকে শওকত জামিলের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী রোববারের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
জানা যায়, গত সোমবার বিকেল পৌনে ৩টার দিকে সদস্য সদস্য তানভীর ইমাম ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনে তাঁর স্ত্রীকে তুলে দিতে স্টেশনে যান। স্ত্রীকে ট্রেনে তুলে দিয়ে তিনি নামার আগেই ট্রেনটি ছেড়ে দেয়। এ সময় তাড়াহুড়ো করে ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে পা পিছলে প্লাটফর্মে পড়ে যান এমপি তানভীর ইমাম। এতে পা ও হাতের কনুইয়ে আঘাত পান তিনি। এরপর স্টেশনে থাকা লোকজন ও তাঁর সমর্থকরা এমপিকে ধরাধরি করে স্টেশন মাস্টারের কক্ষে বসিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এর একপর্যায়ে এমপির সমর্থকরা সহকারী স্টেশন মাস্টার আবদুল বাতেনের কক্ষে ঢুকে তাঁকে চড়-থাপ্পড় মারেন। সিগন্যালের পতাকার লাঠি দিয়ে পেটান।
তবে সহকারী স্টেশন মাস্টারকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে এমপি তানভীর ইমামের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) ইঞ্জিনিয়ার শওকত ওসমান বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকাকালে কোনো ধরনের মারধরের ঘটনা ঘটেনি। কী কারণে সহকারী স্টেশন মাস্টার এ ধরনের কথা ছড়াচ্ছেন তা আমাদের বোধগম্য নয়।’
শওকত ওসমান জানান, এমপি তানভীর ইমাম পায়ে ও হাতে আঘাত পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি ঢাকায় রয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলের পাকশীর বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। এমপির সঙ্গে স্টেশন মাস্টার যান তাঁকে ট্রেনে তুলে দিতে। তিনি তাঁদের ট্রেনে তুলে দিয়ে স্টেশন মাস্টার নেমে পড়েন। পরে সহকারী স্টেশন মাস্টার আবদুল বাতেন ক্লিয়ারেন্স দেওয়ায় ট্রেনটি ছেড়ে দেয়। তখন তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে এমপি আহত হন। ঘটনার পর এমপিকে ধরাধরি করে নিয়ে স্টেশনেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু এ ঘটনার জেরে সহকারী স্টেশন মাস্টার আবদুল বাতেনকে মারধর করা হয়।
অসীম কুমার তালুকদার আরো বলেন, যেহেতু ট্রেনে ওঠার আগে স্টেশন মাস্টার শামসুল আলমের কক্ষে তিনি (এমপি) বসে ছিলেন এবং স্টেশন মাস্টার নিজেও তাঁকে ট্রেনে তুলে দিতে গিয়েছিলেন। তাই প্রাথমিকভাবে দায়িত্বে অবহেলার কারণে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।