বিদ্যমান আইনে কালো টাকা তৈরি হচ্ছে : অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘দেশের বিদ্যমান আইন কালো টাকা তৈরি করতে সহায়তা করছে। বিদেশে যে টাকা পাচার হচ্ছে তা সাদা টাকা নয় বরং পাচার করা হয় কালো টাকা।’
আজ রোববার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কালো টাকার হ্রাস টেনে ধরতে আইনে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি একটি উদাহরণ দিয়ে বলছি; ঢাকায় কেউ ১০ টাকা দিয়ে জমি কিনে এক টাকা মূল্য দেখালেও চলে । এখানে ‘এক টাকা’ হলো সাদা টাকা। আর ১০ টাকার মধ্যে বাকি নয় টাকা হলো কালো টাকা।’ অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এখন অবশ্য মৌজা ভিত্তিক জমির সবোচ্চ দাম নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। কিন্তু এটা অপ্রতুল। কাজেই বিদ্যমান আইন সংশোধনের বিকল্প নেই। এ আইনের সুযোগ নিয়ে কালো টাকার জন্ম হচ্ছে।’
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমি ভালো মনে করে আবগারি শুল্কের হার বাড়িয়েছিলাম। কিন্তু এটা নিয়ে ব্যাপক হৈচৈ, চিৎকার ও কথা হচ্ছে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, “আবগারি শুল্ক, এই নামটা শুনতেও ভালো শোনায় না। এ কারণে আমরা চিন্তা করেছি ‘আবগারি শুল্কের’ নাম পরিবর্তন করার।”
তবে নতুন নাম ঠিক করা হয়নি বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘আগে ২০ হাজার টাকা আমানতের ওপর ৫০০ টাকা আবগারি শুল্ক হিসেবে কেটে নেওয়া হতো। আমি এই সীমাটা এক লাখ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছি এবং আবগারি শুল্কের হারও বাড়ানোর প্রস্তাব করেছি।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো এটা শুধু প্রস্তাব করেছি। এটা তো পাস হয়ে যায়নি। কিন্তু এটা নিয়ে সমালোচনা ও চিৎকার-চেঁচামেচি হচ্ছে।’
নাম পরিবর্তন হলেই কি সমালোচনা, চিৎকার-চেঁচামেচি বন্ধ হবে—এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নাম পরিবর্তনের পাশাপাশি শুল্ক কমানোর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।’
এর আগে অর্থমন্ত্রী অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ১৭টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সম্পন্ন করেন।
গত ১ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
এবারের বাজেটের আকার চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকার। এবারের রাজস্ব আয়ের একটি বড় অংশ আসবে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) থেকে। যদিও এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে ব্যবসায়ীদের। এ বাজেটে কার্যকর হতে যাচ্ছে নতুন ভ্যাট আইন। বহুল আলোচিত এই আইনে ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ নির্ধারিত হবে। বাজেটে ভ্যাট থেকে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে ৮৭ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের মূল লক্ষ্যমাত্রা থেকে ১৫ হাজার ১২৩ কোটি টাকা বেশি।