খুলনায় সুন্দরবন রক্ষায় কনভেনশন

খুলনায় সুন্দরবন রক্ষায় কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীর উমেশ চন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়।
কনভেনশন থেকে সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প বাতিল করার দাবি জানানো হয়। শেষে কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার চার দফা দাবিসংবলিত একটি ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। ঘোষণায় আগামী ১২ সেপ্টেম্বর খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে একটি সাংস্কৃতিক গণসমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, ‘সুন্দরবনকে ক্ষত-বিক্ষত করে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা যাবে না। আমাদের উন্নয়ন ও বিদ্যুৎ প্রয়োজন। কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলের প্রাকৃতিক রক্ষাকবচ সুন্দরবনকে ধ্বংস করে বিদ্যুৎ কিংবা উন্নয়ন প্রয়োজন নেই। প্রয়োজনে অন্য কোথাও বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। সুন্দরবনকে রক্ষা করতে হলে এর আশপাশে এ ধরনের কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা যাবে না।’
বক্তারা বলেন, অবিলম্বে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ সুন্দরবনের ভেতরে ও চারপাশে নির্মাণাধীন এবং সকল সরকারি-বেসরকারি প্রকল্পসহ যে কোনো ধরনের স্থাপনা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
প্রকল্পগুলোর প্রয়োজনীয়তা জরুরি মনে হলে বন থেকে নিরাপদ দূরত্বে তা করতে হবে। অবিলম্বে একটি পরিবেশবান্ধব জাতীয় সুন্দরবন নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করার দাবি জানান বক্তারা।
সুন্দরবন রক্ষা কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আ ফ ম মহসীনের সভাপতিত্বে কনভেনশনের উদ্বোধন করেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব মো. বাবুল হাওলাদারের সঞ্চালনায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক শরীফ জামিল এবং পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) খুলনার সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল।
কনভেনশনে আলোচনায় অংশ নেন সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ডা. আবদুল মতিন, পানি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, সিডিপির নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ জাহাঙ্গীর হাসান মাসুম, তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সংগঠক সরদার রুহিন হোসেন প্রিন্স।
কনভেনশনে প্রস্তাবনা পর্বে বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আলী আহমেদ, খুবির অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ভুঁইয়া, যশোরের অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন, তেল-গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটির বাগেরহাটের আহাদ উদ্দিন হায়দার, ফররুক হাসান জুয়েল, মঞ্জুরুল আলম, মংলা উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. নুর আলম শেখ, কিশোর রায়, কৃষিজমি রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক সুশান্ত দাস, মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব এম এ সবুর রানা, নিজেরা করির গৌর কিশোর সরদার, আবদুল হালিম, সৌরভ সমাদ্দার, মো. রাসেল প্রমুখ।
কনভেনশনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডা. মনোজ দাস, অধ্যাপক শেখ সাদী ভূঁঞা, অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-খুদা, এস এ রশিদ, এইচ এম সাহাদৎ, মফিদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম, আলহাজ লোকমান হাকিম, মুক্তিযোদ্ধা মোড়ল নূর মোহাম্মদ, নারীনেত্রী রসু আক্তার, অ্যাডভোকেট আক্তার জাহান রুকু, অ্যাডভোকেট এম এম রুহুল আমিন, ডা. গৌতম সরকার, নাজমুল আযম ডেভিড, স্বপন কুমার দাস, আবুল খায়ের মজনু, অশোক সরকার, নিতাই পাল, অ্যাডভোকেট তৌহিদুর রহমান চৌধুরী তুষার, এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব, মাকছুদুর রহমান মিলন, এস এম মাহবুবুর রহমান খোকন, মাহাবুব আলম বাদশা, মাহাবুব আলম প্রিন্স, এস এম দেলোয়ার হোসনে, আফজাল হোসনে রাজু, প্রভাষক বজলুর রহমান, অ্যাডভোকেট খন্দকার মো. মহাসীন, ধীমান বিশ্বাস, এস এম এ রহিম প্রমুখ।
কনভেনশনের আয়োজক সংগঠনগুলো হচ্ছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি, সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), নিজেরা করি, কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ (সিডিপি), সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), খুলনা নাগরিক সমাজ, মংলা নাগরিক সমাজ, মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল রক্ষা আন্দোলন কমিটি, ছায়াবৃক্ষ, বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (বেডস), ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন সোসাইটি বাংলাদেশ।