ঢলে ধান গেছে, চালের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সংশয়
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে এবার সরকারিভাবে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। পাহাড়ি ঢল ও অতিবর্ষণে এ বছর বোরো আবাদ কম হয়েছে।
এ বছর উপজেলা থেকে দুই হাজার ৪৪ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এই চাল সরবরাহের জন্য উপজেলার ৬৯টি চালকলের মধ্যে মাত্র ১৬টি সরকারিভাবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। ফলে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
এ অবস্থার মধ্যেই ঝিনাইগাতী উপজেলা সরকারি খাদ্যগুদামে গত ২২ মে আনুষ্ঠানিকভাবে চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক খলিলুর রহমান জানান, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় দুই হাজার ৪৪ টন বোরো চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত প্রতি কেজি সেদ্ধ চাল ৩৪ টাকা দরে কেনা হবে।
উপজেলার বাকি চালকল মালিকরা বলছেন, বাজারদরের চেয়ে সরকারের বেঁধে দেওয়া চালের দর কম হওয়ায় সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহে আগ্রহী হচ্ছেন না তাঁরা।
পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় এ বছর ঝিনাইগাতী উপজেলার বোরো আবাদ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এবার উপজেলায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল। এর মধ্যে বন্যায় প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমির ধান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরো চার হাজার হেক্টর জমির ধান। ফলে স্বভাবতই এবার বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক খলিলুর রহমান বলেন, ‘সবই নির্ভর করে বাজার ফেভার করার ওপর। বাজার যদি ফেভার করে, তাহলে পুনর্বরাদ্দের মাধ্যমে ১৬টি চালকল দিয়েই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হতে পারে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝিনাইগাতী উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাদশা বলেন, ‘চাল সরবরাহের জন্য আমি বাকি চালকল মালিকদের আহ্বান জানিয়েছে । কিন্তু তারা যদি চাল না দেয়, তাহলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে কিছুটা সংশয় থেকে যায় বৈকি।’
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ জেড এম শরীফ হোসেন বলেন, ‘আমরা মূলত মোটিভেশনের (বুঝিয়ে) মাধ্যমে চালকলগুলো থেকে চাল পাওয়ার চেষ্টা করছি। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সংগ্রহের সময়সীমা রয়েছে। এর মধ্যে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব।’
ইউএনও আরো বলেন, ‘এবার যেহেতু বন্যায় উপজেলার বোরো আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি, সেহেতু সংশয় তো একটু রয়েছেই। তবে আমরা সংশয় মাথা রেখেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য চেষ্টা করছি।’