টেংরাটিলায় এখনো গ্যাসের বুদবুদ

সুনামগঞ্জের টেংরাটিলা গ্যাস ক্ষেত্র বিস্ফোরণের ১০ বছর আজ ২৪ জুন। দোয়ারাবাজার উপজেলার টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে ২০০৫ সালের ২৪ জুন রাত ২টায় দ্বিতীয় দফার ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এখনো গ্যাসক্ষেত্রের আশপাশে বুদবুদ করে গ্যাস বের হচ্ছে।
পুকুরের পানি, ফসলের জমি, ঘরের চুলা, টিউবয়েলের পাইপ, নরম মাটি দিয়ে গ্যাস বের হওয়ায় এখনো আতঙ্ক যায়নি এলাকাবাসীর।
যদিও প্রশাসন বলছে, গ্যাস উত্তোলন করে সরবরাহ না করা পর্যন্ত চাপ কমবে না। তার জন্য বিস্ফোরণের ঘটনায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনকারী সংস্থা নাইকোর সঙ্গে চলা মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি রাত ১০টায় টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে প্রথম দফা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আগুনের তাপে গভীর রাতে গ্যাসক্ষেত্রের উৎপাদন কূপের রিগ ভেঙে যায়। আগুনের শিখা ২০০ থেকে ৩০০ ফুট পর্যন্ত ওঠানামা করছিল। পরে এক মাসেরও বেশি সময় জ্বলার পর আপনা-আপনি আগুন নিভে যায়।
দ্বিতীয় দফা বিস্ফোরণ ঘটেছিল একই বছরের ২৪ জুন গভীর রাতে। বিস্ফোরণের পর নাইকোর তরফ থেকে প্রথমে বিপদ সংকেত বাজানো হয়। পরে রাত ৩টায় লোকজনকে এলাকা ছেড়ে তিন কিলোমিটার দূরে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
রাত সাড়ে ৩টায় দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠা আগুনে ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কূপ এলাকার তিন কিলোমিটার দূরেও ভূ-কম্পন অনুভূত হয়।
দুই দফা অগ্নিকাণ্ডে গ্যাসক্ষেত্রের বিপুল ক্ষতি হয়। টেংরাটিলা, আজবপুর, গিরিশনগর, কৈয়াজুরি, টেংরাবাজার এবং শান্তিপুরের মানুষের ঘরবাড়ি, গাছগাছালি ও হাওরের ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান মাস্টার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, যে হারে বাড়িঘর, পুকুর, রাস্তাঘাটে গ্যাস বের হচ্ছে। তাতে করে গ্যাসক্ষেত্রের কর্মকর্তাদের কথায় আমরা মোটেও আশ্বস্ত হতে পারছি না। যেকোনো সময় এখানে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘টেংরাটিলায় যে ব্লো-আউট হচ্ছে, এটি বিপদের কিছু নয়। গ্যাস উত্তোলন করে সরবরাহ না করা পর্যন্ত গ্যাসের চাপ থাকবেই। কানাডিয়ান কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে মামলা চলছে, এই মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষা করা হচ্ছে।