র্যাবের দাবি বন্দুকযুদ্ধে নিহত, তুলে নেওয়ার অভিযোগ পরিবারের
গাজীপুরের হায়দরাবাদে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ‘সন্দেহভাজন ডাকাত ও শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুন আহমেদ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এ সময় র্যাবের দুই সদস্য আহত হয়েছেন বলেও সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তবে নিহত মামুনের পরিবারের দাবি, তিনি সাধারণ একজন ব্যবসায়ী এবং তাঁকে তুলে নেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অনেক আগের দুটি মামলা থাকলেও সাম্প্রতিককালে কোনো মামলা নেই। মামুনের খালাতো ভাই বিপ্লব এনটিভি অনলাইনকে এসব কথা জানান।
এদিকে সকালে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার মিডিয়া অ্যান্ড লিগ্যাল উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান জানান, আজ মঙ্গলবার ভোররাত ৩টার দিকে হায়দরাবাদ এলাকার মহাসড়কে র্যাব ১-এর সদস্যরা নিয়মিত টহল দিচ্ছিলেন। এ সময় সাত-আটজনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদল র্যাবের গাড়ি আটকে গুলি চালায়। এ সময় র্যাবও পাল্টা গুলি চালালে উভয় পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ হয়। এতে মামুন নামে এক সন্ত্রাসী নিহত ও দুই র্যাব সদস্য আহত হন। বাকিরা পালিয়ে যায়।
ঘটনাস্থল থেকে ডাকাতদলের ব্যবহৃত একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, দুটি গুলি ও দুটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়। নিহত মামুনের লাশ গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানায় র্যাব। নিহতের বুকে দুটি এবং পেটে একটি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে।
এ ছাড়া বন্দুকযুদ্ধে আহত দুই র্যাব সদস্যকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
নিহত মামুন আহমেদ টঙ্গীর মধ্য আরিচপুরের বাসিন্দা। তিনি গার্মেন্টসের ঝুটের ব্যবসা করতেন। তাঁর বিরুদ্ধে অনেক আগের দুটি মামলা থাকলেও সন্ত্রাসী হিসেবে টঙ্গী পুলিশ চেনে না বলে জানান মামুনের খালাত ভাই বিপ্লব। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, গত রোববার রাতে বাড়ির পাশের রবি কাস্টমার কেয়ারের একটি সেন্টারে বসা ছিল মামুন। এ সময় সেখানে একটি হায়েস গাড়ি এসে থামে। তাঁর সাথে আরো একজনকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু সে উঠতে না চাইলে তাঁকে চড়-থাপ্পর মেরে ফেলে রেখে যায়। মামুনকে তুলে নেওয়ার সময় কেউ কোনো পরিচয় দেয়নি।
‘আমরা তখন মামুনের খুঁজে ডিবি, র্যাব কার্যালয় ও থানায় যোগাযোগ করি। কোথাও তাঁকে পাইনি। আজ সকালে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে বন্দুকযুদ্ধে মামুনের নিহতের খবর দেখতে পাই। পরে হাসপাতালে এসে দেখি তাঁর লাশ পড়ে আছে।’ বলেন নিহতের ভাই বিপ্লব।
ঘটনার সময় সামনে থাকা কামাল নামের এক যুবক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ওই দিন ইফতারের পর চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়াইয়া বাংলাদেশের খেলা দেখতে ছিলাম। একটা হায়েস আইসা উনারে তুলে নিয়ে যায়। আমি তখন লোকজনের সাথে কথা বলতে ছিলাম। আমারে টান দিছে। আমি জোরাজুরি করছি, চিল্লাচিল্লি করছি। তখন আর আমারে নিতে পারে নাই। তাঁরা কোনো পরিচয়ও দেয় নাই। তাঁরা কি প্রশাসনের লোক, সিভিলে আসছে তাঁরা।’