এসআইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক, কনস্টেবলের আত্মহত্যা!
ময়মনসিংহের গৌরীপুর থানার এক নারী কনস্টেবল শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। আজ রোববার সন্ধ্যার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত কনস্টেবলের নাম হালিমা খাতুন (কনস্টেবল নম্বর : ১০৪৭)। তিনি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার গয়রাকান্দা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিনের মেয়ে।
হালিমার সঙ্গে গৌরীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুলের সম্পর্ক রয়েছে এবং তাঁর কারণে হালিমা আত্মহত্যা করেছেন- এই অভিযোগ ওঠার পর এসআইকে প্রত্যাহার করে ময়মনসিংহ পুলিশ লাইন্সে পাঠানো হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে।
পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এ নেওয়াজীকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সীমা রানী সরকার ও কোর্ট ইন্সপেক্টর নওয়াজেশ আলী মিয়া। তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে। পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার আহমেদ জানান, বেলা ৩টার দিকে থানা কোয়ার্টারে হালিমা খাতুন তাঁর ঘরের দরজা বন্ধ করে কেরোসিন ঢেলে নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন। হালিমার চিৎকার শুনে সহকর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে হালিমার অবস্থার অবনতি ঘটে। জরুরি ভিত্তিতে সন্ধ্যায় ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ফারজানা জানান, হালিমা খাতুন আগুনে দগ্ধ হলে তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছিল। পথে অবস্থার অবনতি ঘটলে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পরীক্ষা করে হালিমাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম নেওয়াজী বলেন, একই থানায় কর্তব্যরত এসআই মিজানুলের সঙ্গে নিহত কনস্টেবলের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল বলে গুঞ্জন ওঠার পর পুলিশ সুপার তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। দোষী প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি, বিভাগীয় মামলাসহ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেছেন, গুঞ্জন উঠেছে। এসআই মিজানুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।