পুলিশ গ্রেপ্তারের পর ছাত্রদল নেতার লাশ পাওয়া গেছে : খসরু
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক নূরুল আলম নূরুকে পুলিশের পোশাকধারীরা ধরে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁর লাশ পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। শান্তিপূর্ণভাবে এই হত্যাকাণ্ডের জবাব দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আজ শুক্রবার সকালে চট্টগ্রামের মর্গে ছাত্রদল নেতা নূরুল আলমের লাশ দেখতে গিয়ে এসব কথা বলেন আমীর খসরু।
বিএনপির স্থানীয় কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমাদের অত্যন্ত প্রিয় নূরুল আলমকে তাঁর বাসা থেকে সাদা পোশাকধারী ও পুলিশের পোশাকধারী সেখান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে নিয়ে গেছে এবং পরবর্তী দিনে তাঁর লাশ পাওয়া গেছে। এটা হচ্ছে বর্তমান সরকারের গুম, খুন, হত্যাযজ্ঞের যে রাজনীতি তার শিকার হয়েছে অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা। চট্টগ্রামবাসীসহ বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তির সকলে আজকে শোকাহত, চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ আজ শোকাহত। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি, আমরা এর জবাব দেব শান্তিপ্রিয়ভাবে।’
আমীর খসরু বলেন, ‘এর সুষ্ঠু তদন্ত আমরা আশা করছি, আমরা সুশৃঙ্খলভাবে, নিয়মতান্ত্রিক যে রাজনীতি বিএনপি করছে সেই নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির প্রতিফলন আজকে আমরা ঘটাব। সুশৃঙ্খলভাবে তাঁর মরদেহ এখান থেকে নিয়ে যাব, জানাজা পড়ব এবং জানাজা পড়ার পরে সেখান থেকে তার পরিবার সমাধিস্থলে নিয়ে যাবে।’
এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে পরবর্তী সময়ে কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান আমীর খসরু। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এই হত্যাকাণ্ডের জবাব দিচ্ছি নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির মাধ্যমে। কারণ বর্তমান সরকারের এই সন্ত্রাসী, নির্মম হত্যাযজ্ঞের প্রতিযোগিতার রাজনীতি আমরা করতে যাচ্ছি না, আমরা নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করতে যাচ্ছি।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে নূরুল আলমের জানাজায় শরিক হওয়ার জন্য চট্টগ্রামে আসেন বিএনপির উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি।
গত বুধবার রাতে পুলিশ পরিচয়ে চট্টগ্রাম নগরীর বাসা থেকে নূরুল আলমকে ধরে নিয়ে যায় একদল লোক। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাউজান উপজেলার বাগোয়ান এলাকায় কর্ণফুলীর নদীর পাশে পাওয়া গেছে তাঁর মাথায় গুলিবিদ্ধ লাশ।
লাশ উদ্ধারের সময় নূরুর দুই হাত কমলা রঙের মোটা নাইলনের রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। পরনে শার্ট ছিল না। সেটি দিয়ে দুই চোখ ছিল বাঁধা। লাশ ছিল উপুড় করা। শরীরে জামা ছিল না। লুঙ্গি পরা থাকলেও পশ্চাৎদেশ ছিল উন্মুক্ত। পশ্চাৎদেশ ও হাতের বিশাল অংশে ছিল কালচে দাগ।
নিহত নূরু চার মাসের একটি কন্যাসন্তান, দুই ছেলেসহ পরিবার নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর চন্দনপুরা মিনহাজ মঞ্জিলের বাসায় ভাড়া থাকতেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়ায়।