‘ডাস্টবিনের’ শিশুকে পেয়ে কেঁদে ফেলল দম্পতি
চট্টগ্রামে ডাস্টবিনে কুঁড়িয়ে পাওয়া নবজাতক একুশকে পেতে ১৩ জন নিঃসন্তান দম্পতি আদালতে আবেদন করেছিলেন। সেই দম্পতিদের মধ্যে হাসি ফুটল শুধু এক চিকিৎসক দম্পতির মধ্যে। আনন্দে আদালত প্রাঙ্গণেই কেঁদে ফেলেন তাঁরা।
আজ বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস ১৯ বছর ধরে নিঃসন্তান ওই চিকিৎসক দম্পতির জিম্মায় শিশু একুশকে হস্তান্তর করার আদেশ দিয়েছেন।
তবে এজন্য কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছেন বিচারক। প্রথমত চিকিৎসক দম্পতিকে আগামী ৮ এপ্রিলের মধ্যে একুশের নামে ১০ লাখ টাকার শিক্ষা বিমা করতে হবে। তা করতে পারলে ১০ এপ্রিলের মধ্যে একুশকে তাদের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তিন মাস পরপর আদালত শিশু একুশের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবেন। এ ছাড়া শিশুটির প্রকৃত অভিভাবক পেলে তখন তাঁদের কাছে হস্তান্তর করার কথাও জানিয়েছেন আদালত।
১৩ দম্পতির আবেদনের ওপর দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত আজ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. জাকিরুল ইসলাম জাকির ও তাঁর স্ত্রী শাকিলা আক্তারে কাছে একুশকে হস্তান্তরের আদেশ দেন।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি নগরীর আকবর শাহ থানা এলাকার কর্নেল হাটের একটি ডাস্টবিন থেকে এক নবজাতককে উদ্ধার করে পুলিশ। তার নাম দেওয়া হয় একুশ। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এনআইসিইউ) ভর্তি করা হয়। এখনো সেখানে চিকিৎসাধীন আছে শিশুটি।
আদালত প্রাঙ্গণে ডা. মো. জাকিরুল ইসলাম জাকির সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ডাক্তার হিসেবে শিশুদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাজ করেছি। শিশু আমার খুব ভালো লাগে। কিন্তু আমরা দীর্ঘদিন শিশু পাইনি। আমাদের একটা আক্ষেপ ছিল। এখন মহামান্য বিজ্ঞ আদালত যে পরামর্শ দিয়েছেন, নির্দেশনা দিয়েছেন; সেই নির্দেশনার আলোকে আমরা শিশুটিকে মানুষ করতে চাই।’
ডা. জাকিরের স্ত্রী শাকিলা আক্তার বলেন, ‘শিশুটিকে আমরা আমাদের মতো করে মানুষ করতে চাই। আমার যতটুকু জ্ঞান আছে, আমার বিবেচনা আছে, ততটুকু দিয়ে আমি মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলব। আমার সন্তানকে আমার পরিচয় দিয়ে বড় করে তুলব।’