ঘৃণায় ‘জঙ্গি’ দম্পতির লাশ নিচ্ছে না পরিবার

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত ‘জঙ্গি দম্পতি’ কামাল উদ্দিন, তাঁর স্ত্রী জোবাইদা ইয়াসমিন ও তাদের শিশুসন্তানের লাশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে পরিবার।
আজ সোমবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে নিহত কামালের বাবা ও তাঁর শ্বশুর লাশ গ্রহণ করবেন না বলে পুলিশকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। ঘৃণ্যকাজে জড়িত থাকার কারণেই পরিবার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
গত ১৬ মার্চ (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে সীতাকুণ্ড পৌরসভার প্রেমতলা এলাকায় ছায়ানীড় নামে একটি বাড়িতে ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযান চালান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় নিহত হন কামাল উদ্দিন, তাঁর স্ত্রী জোবাইদা ইয়াসমিনসহ পাঁচজন। এদের মধ্যে তাদের শিশুসন্তানও ছিল। বাকি দুজনের বাড়ি ঢাকার মিরপুরে। তারা পরস্পরের খালাতো ভাই।
এর আগের দিন বুধবার কাছাকাছি আমিরাবাদ এলাকার ‘সাধন কুটির’ থেকে জহিরুল হক (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলেছে জসিম) ও তাঁর স্ত্রী রাজিয়া সুলতানাকে (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলেছে আর্জিনা) গ্রেপ্তার করা হয়। কালাম, ইয়াসমীন, জহিরুল ও রাজিয়া এই চারজন পরস্পরের আত্মীয়। তাদের সবার বাড়ি বাইশিরা ইউনিয়নের দুর্গম যৌথ খামারপাড়ায়। তারা চাকরির কথা বলেই দীর্ঘদিন ধরে ‘বিচ্ছিন্ন’ বলে পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন।
আজ নিহত কামাল হোসেনের বাবা মোজাফফর আহমদ জানান, তাঁর ছয় সন্তান। কামাল মেজো। স্ত্রীকে ডাক্তার দেখানোর নাম করে গত রমজান মাসে বাড়ি ছাড়েন তিনি। এরপর থেকে তাঁর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। সন্তানদের মধ্যে কামালই সবচেয়ে দায়িত্ববান ছিলেন বলে জানান বাবা।
মোজাফফর আরো জানান, কামাল জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত থাকায় পরিবারের অনেক সম্মানহানি হয়েছে। এ ঘৃণ্য কাজের জন্য তাঁর লাশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কামালের স্ত্রী নিহত জোবাইদা ইয়াসমিনের বাবা নুরুল আলমও একই কথা বলেন। তিনি জানান, তিন-চার মাস আগে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার নাম করে স্বামীর সঙ্গে নিখোঁজ হন জোবাইদা। পরিবারের মান-সম্মানের কথা চিন্তা করেই মেয়ের লাশ নেবেন না তিনি। লাশ আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফনের কথা জানান নুরুল।