জাপা নেতাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পন্ন

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাতীয় পার্টির নেতা সাখাওয়াত হোসেনসহ ১২ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পন্ন করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে হত্যা, গণহত্যাসহ পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আজ রোববার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান ও তদন্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক খান প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
সাখাওয়াতসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে প্রসিকিউশনের আবেদনে গত বছরের ২৬ নভেম্বর পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে ২৯ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরখান থেকে সাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত ২২ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালের আদেশে ধানমণ্ডির সেফহোমে গ্রেপ্তার হওয়া সাখাওয়াতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত সংস্থা।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা জানায়, সাখাওয়াতসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। মোট পাঁচটি অভিযোগে এই তদন্ত প্রতিবেদন ১৮ জুনের মধ্যে দাখিল করা হবে।
আসামিদের মধ্যে সাখাওয়াত ছাড়া গ্রেপ্তার অন্য তিনজন হলেন মো. বিল্লাল হোসেন, মো. আকরাম হোসেন ও ওজিয়ার মোড়ল। বাকিরা পলাতক রয়েছেন। পলাতক বাকি আসামিরা হলেন—মো. ইব্রাহিম হোসেন, শেখ মো. মজিবুর রহমান, মো. আবদুল আজিম সরদার, মো. আজিম সরদার, কাজী ওয়াহেদুল ইসলাম, মো. লুৎফর মোড়ল, মো. আবদুল খালেক মোড়ল ও মশিয়ার রহমান। তাঁদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তাঁদের আত্মসমর্পণের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল-১।
সাখাওয়াতসহ ১২ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় কেশবপুরের চিংড়া, ভাল্লুকঘরসহ বিভিন্ন এলাকায় হত্যা, গণহত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ নানা ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ করেন তাঁরা। কেশবপুরের রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে নেতৃত্ব দিয়ে সহযোগীদের দিয়ে এসব অপকর্ম করান তিনি।
সাখাওয়াত ১৯৯১ সালে যশোর-৬ আসনে জামায়াতের পক্ষে নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সংসদ সদস্য থাকাবস্থাতেই তিনি জামায়াত ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য হন তিনি। ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির পক্ষে নির্বাচন করে পরাজিত হন সাখাওয়াত। সর্বশেষ তিনি জাতীয় পার্টির রাজনীতির প্রেসিডিয়াম মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।