দালালের ফাঁদে পড়ে লাশ হয়ে ফিরছেন রেশমা

দালালদের ফাঁদে পড়ে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে গিয়ে জর্ডান থেকে লাশ হয়ে ফিরছেন খুলনার রূপসা উপজেলার নন্দনপুর গ্রামের গৃহবধূ রেশমা বেগম (৩৫)। আগামীকাল শনিবার ভোরে তাঁর লাশ আসছে দেশে।
রেশমা বেগম নন্দনপুরের দরিদ্র দেলোয়ার হোসেন দিলুর স্ত্রী ও ডুমুরিয়া উপজেলার শাহপুর ইউনিয়নের বর্নি গ্রামের মো. শাহজাহান বাওয়ালীর মেয়ে।
রেশমার স্বামী দেলোয়ার হোসেন দিলু শুক্রবার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘নন্দনপুর গ্রামের দুই দালালকে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল জর্ডানে গিয়েছিল রেশমা। ৩ জুন দেশে ফিরে আসতে সে আমার কাছে কান্নাকাটি করে। এরপর আর কথা হয়নি রেশমার সাথে। ওর নম্বরটাও বন্ধ পেয়েছি।’
দেলোয়ার হোসেন দিলুর ছোট ভাই কামাল হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘দিলু ভাইয়ের কোনো মোবাইল নেই। ৮ জুন আমার মোবাইলে জর্ডানের বাংলাদেশি দূতাবাস থেকে ফোন করে জানানো হয়, রেশমা বেগমের লাশ পাওয়া গেছে। শনিবার ভোর ৪টা ২৫ মিনিটে ঢাকার হয়রত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাশটি আসবে।’
লাশের খবর পাওয়ার পর দালালচক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা ঘটনাটি কোথাও না জানাতে বলে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয় জানিয়ে কামাল হোসেন বলেন, ‘তবে কোথায়, কীভাবে রেশমার মৃত্যু হয়েছে তা আমরা জানি না।’
এদিকে রেশমা মারা যাওয়ার খবরে পাগলপ্রায় তাঁর দুই ছোট সন্তান আবীর (৭) ও আমীর (৪)।
রেশমার স্বজনরা অভিযোগ করেন, রেশমার প্রতিবেশী নন্দনপুর গ্রামের ফজলে হাওলাদারের মেয়েজামাই ফুলতলার জাকারিয়া বিদেশে লোক পাঠান। নাসিমা বেগম প্রায়ই বাড়িতে এসে রেশমাকে বিদেশে যাওয়ার জন্য বলতেন এবং নানা প্রলোভন দেখাতেন। একপর্যায়ে ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে মাসিক ১৫ হাজার টাকা বেতনের শর্তে জর্ডানে পাঠানো হয় রেশমাকে।
স্বামী দেলোয়ার হোসেন দিলু রাজি না থাকলেও তাঁকে না জানিয়েই পাসপোর্ট-ভিসা করেন রেশমার বাবা-মা।
এ ব্যাপারে নন্দনপুরের নাসিমা বেগমের স্বামী ফুলতলার বাসিন্দা মো. জাকারিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।