সৌদি প্রবাসীকে হত্যা, স্ত্রীর ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার আলোচিত সৌদি প্রবাসী অলিউল্লাহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্ত্রীসহ জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।
আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে এ কর্মসূচিতে এলাকার সহস্রাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এতে প্রায় আধা ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে শ্রীনগর থানা পুলিশ ও হাঁসাড়া হাইওয়ে থানা পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেয়।
এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি স্ত্রী মাজেদা বেগম (৩২) তাঁর স্বামী অলিউল্লাহকে বিদেশ যাওয়ার আগের রাতে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরের দিন মঙ্গলবার সকালে মাজেদা বেগম ঘরে স্বামীর লাশ রেখে শ্রীনগর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। পরে মাজেদার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহিদুর রহমানসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা উপজেলার পুটিমারা গ্রামে অলিউল্লাহর বাড়ি থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করেন। এ সময় অলিউল্লাহর হাত-পা ওড়না দিয়ে বাঁধা ও গলায় ওড়না পেঁচানো ছিল।
অলিউল্লাহর ভাই দীন ইসলাম জানান, অলিউল্লাহ ১৮ বছর সৌদি আরব ছিলেন। এই সময়ে বেশ কয়েকবার তিনি দেশে আসেন। ১৪ বছর আগে উপজেলার হাসাড়া গ্রামের মাজেদা বেগমের সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের বিয়ে হয়। তাঁদের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। প্রবাসে থেকেই তাঁর ভাই স্ত্রীর নামে প্রায় অর্ধকোটি টাকার জমি কেনেন। সর্বশেষ তিন মাস আগে অলিউল্লাহ সৌদি আরব থেকে গ্রামের বাড়িতে আসেন। বাড়িতে এসে তিনি ওই সব জমি বিক্রি করে ব্যবসা করতে চাইলে স্ত্রী তাতে বাধা দেন। উপায় না দেখে অলিউল্লাহ আবার সৌদি আরব যাওয়ার জন্য চেষ্টা করেন। স্ত্রী তাতেও বাধা দেন এবং ভিসাসহ অলিউল্লাহর পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলেন। এ নিয়ে হাসাড়া ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) সালিসও হয়েছে। পরে অলিউল্লাহ আবার পাসপোর্ট তৈরি করে সৌদি আরব যাওয়ার উদ্যোগ নেন। কিন্তু যাওয়ার আগেই স্ত্রী মাজেদা তাঁকে হত্যা করেন।
এদিকে, ছেলেকে হত্যার খবর শুনে অলিউল্লাহর বৃদ্ধ বাবা ইদ্রিস মোল্লা (৯৫) ওইদিন রাত ৯টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
এ ঘটনায় অলিউল্লাহর বড় ভাই মো.আহসান উল্লাহ বাদী হয়ে মাজেদা বেগম, তাঁর বাবা নুরু খলিফা, দুই ভাই হাবিব ও মাসুমকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহিদুর রহমান জানান, অলিউল্লাহ হত্যা মামলায় তাঁর স্ত্রী মাজেদা বেগম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।