অবশেষে বদলি হলেন ভৈরব পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী
নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ মাথায় নিয়ে অবশেষে বদলি হলেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হেলাল মো. আফজাল।
বুধবার বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) প্রধান কার্যালয় থেকে উপ-পরিচালক-১ মেহেরুন্নেছা খানম স্বাক্ষরিত দপ্তরাদেশে এই বদলির আদেশ দেওয়া হয়। আফজাল মো. হেলালকে নেত্রকোনা পিডিবিতে বদলি করা হয়েছে বলেও ওই আদেশ থেকে জানা যায়। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাঁকে বর্তমান কর্মস্থল ত্যাগ করতে হবে বলে আদেশপত্রে উল্লেখ করে বলা হয়, অন্যথায় এই আদেশ স্ট্যান্ড রিলিজ বলে গণ্য হবে।
বদলির আদেশ পাওয়ার কথা স্বীকার করে নির্বাহী প্রকৌশলী হেলাল মো. আফজাল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি আফসেট। এই বিষয়ে মোবাইলে কথা বলতে চাই না।’
তাঁর বিরুদ্ধে গ্রাহকদের পক্ষে নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা বিষয়ে জানতে চাইলে আফজাল বলেন, ‘আমি বিদ্যুৎচোরদের বিরুদ্ধে এখানে অনেক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছি। ওদের শাস্তি ও জরিমানার মুখোমুখি করেছি। ওদের তরফ থেকে এ রকম অভিযোগ উঠতেই পারে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কয়েক মাস আগেও হেলাল মো. আফজালকে বদলির আদেশ করা হয়েছিলো। কিন্তু চেষ্টা-তদবির করে সেবার তিনি বদলির আদেশ বাতিল করে ভৈরবে থেকে যান। এদিকে বিদ্যুৎ গ্রাহক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অফিসে স্বেচ্ছাচারিতা, বিদ্যুৎ বিতরণে বিশৃঙ্খলা তৈরি করার মতো নানা অভিযোগ রয়েছে।
ভৈরব পিডিবি সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নির্বাহী প্রকৌশলী হেলাল মো. আফজাল ভৈরব কার্যালয়ে যোগ দেন। এখানে যোগদানের পর থেকে অফিসে স্বেচ্ছাচারিতা চালানো শুরু করেন বলে তাঁর সহকর্মীদের অভিযোগ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা জানান, অফিসের নিজস্ব গাড়ি চালক থাকা সত্ত্বেও তিনি তাঁর নিজ এলাকা গাইবান্ধা থেকে এক নিকট আত্মীয়কে নিয়ে এসে চালক হিসেবে এবং কয়েকজনকে মিটার রিডার পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরির সুযোগ করে দেন।
এই পিডিবি এলাকার জন্য চাহিদা মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ বরাদ্ধ থাকা সত্ত্বেও সরবরাহ লাইনের নানা ত্রুটি মেরামত না করাসহ বিশৃঙ্খলার জন্য গ্রাহকদের লোডশেডিংয়ের শিকার হয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হতো। এই সব বিষয়ে হেলাল মো. আফজালের কাছে কেউ অভিযোগ করলে তিনি কাউকে তোয়াক্কা না করে নিজের খেয়াল খুশি মতো কাজ করতেন। ভৈরব বিদ্যুৎ বিতরণ এলাকায় বিভিন্ন সময়ে ট্রান্সফরমার বিকল হলে তিনি গ্রাহকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের উৎকোচ না নিয়ে মেরামত করে দিতেন না।
দুই মাস আগে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ভৈরবে এলে স্থানীয় বিদ্যুৎ সরবরাহের দুরবস্থা দূর করতে ৫০টি ট্রান্সফরমার বরাদ্দ দেন। এই ট্রান্সফরমারগুলো টেন্ডারের মাধ্যমে গ্রাহক এলাকায় সরবরাহ দিতে তিনি মোটা অঙ্কের ঘুষ গ্রহণ করেন বলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকরা অভিযোগ করেন।