কালীগঞ্জে হাসপাতালে হামলা, চিকিৎসকদের কর্মবিরতি
গাজীপুরের কালীগঞ্জে রোগী মারা যাওয়ার ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলা চালিয়ে চিকিৎসকসহ পাঁচজনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কর্মবিরতি পালন করেছেন চিকিৎসকরা।
গতকাল বুধবার হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মচারীরা এ কর্মবিরতি পালন করেন। হাসপাতালে হামলা, ভাংচুর ও মারধরের ঘটনায় বুধবার থানায় মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ আক্তার মোল্লা (৪৫) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) অরুপ কুমার দাস ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কলিঙ্গা গ্রামের বাবুল মিয়াকে (৪৫) গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় গত মঙ্গলবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রোগীর অবস্থার গুরুতর দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইনিস্টিটিউটে পাঠানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু ওই সময় হাসপাতালের একমাত্র সরকারি অ্যাম্বুলেন্সটি সেখানে ছিল না। অ্যাম্বুলেন্সটি আগে থেকেই অন্য রোগী নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করছিল।
রোগীর স্বজনরা অন্য জায়গায় অ্যাম্বুলেন্স আনতে গেলে দুই ঘন্টার মধ্যে বাবুল মারা যান। এতে রোগীর স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও স্টাফদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এ ছাড়াও জরুরি বিভাগের কম্পিউটার, টেবিল-চেয়ার ও চিকিৎসা কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ভাংচুর করে। এ সময় তারা জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মীর মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, ইনডোর চিকিৎসক আশীষ কুমার বণিক, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা মো. আবদুল মোতালিব, সুলতান আহম্মেদ ও নিরাপত্তা প্রহরি আরিফ জালাল আকন্দকে মারধর করে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মচারীরা কর্মবিরতি শুরু করেন। গতকাল বুধবার হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা কার্যক্রম চললেও বহির্বিভাগসহ অন্য বিভাগে কর্মবিরতি পালন করা হয়।
পরে বিক্ষুব্ধ চিকিৎসক ও কর্মচারীরা বৈঠক করে হাসপাতালে হামলা, ভাংচুর এবং কর্তব্যরত চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন। এ সময় তাঁরা ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি করেন। ওই সময়ের মধ্যে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে পরবর্তীতে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণারসিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে হাসপাতালে হামলা, ভাংচুর ও মারধরের খবর পেয়ে বুধবার গাজীপুরেরর সিভিল সার্জন মো. আলী হায়দার খান ও কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাদেকুর রহমান আকন্দসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আহত চিকিৎসকদের খোঁজ নেন।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলম চাঁন জানান, কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. সাদেকুর রহমান বাদি হয়ে মামলাটি করেছেন। এতে দশজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর এজহারভুক্ত একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।