এক বছরে ‘অর্ধেক লোকবল’ কেপিএমে
গত এক বছরে এশিয়ার বৃহত্তম কাগজকল কর্ণফুলী পেপার মিলের (কেপিএম) লোকবল প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। ব্যয় সংকোচন করতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার এ কাগজ কারখানায় ২০১৬ সালের শুরুতে লোকবল ছিল এক হাজার ২৭৫ জন। ওই বছরের জানুয়ারিতে এক আদেশে কারখানার ৩২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অন্যত্র বদলি করা হয়। তখন লোকবল দাঁড়ায় ৯৫৫ জনে। এর পর গত বৃহস্পতিবার আরেক আদেশে ২৩০ জনকে বদলি করা হয়। এখন সেখানে লোকবল রয়েছে ৭২৫ জন।
সর্বশেষ কর্ণফুলী পেপার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খান জাবেদ আনোয়ার এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অন্যত্র বদলির সুপারিশ করেছেন। সুপারিশে ‘উৎপাদন কমে যাওয়ায় খরচ কমাতে অপ্রয়োজনীয় জনবল অপসারণ করে ব্যয় সংকোচনের’ কথা বলা হয়েছে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক খান জাবেদ আনোয়ার জানান, সাম্প্রতিক সময়ে এই কাগজকলে যে উৎপাদন হচ্ছে, তা খুবই নগণ্য এবং এর জন্য এত বেশি কর্মচারী-কর্মকর্তা প্রয়োজন নেই। তাই ধারাবাহিকভাবে এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) অধীন অন্যান্য কারখানায় বদলির সুপারিশ করা হয়েছে।
এসব শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তাকে চট্টগ্রামের সিইউএফএল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার টিএসপিসিএল, সিসিসিএল, এএফসিসিএল, সিলেটের এসএফসিএল, পলাশের পিইউএফএফএল, আশুগঞ্জের ইউএফএফএল এবং জামালপুরের তারাকান্দির জেএফসিএলে বদলির সুপারিশ করা হয়।
১৯৫১ সালে প্রমত্তা কর্ণফুলী নদীর তীরে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় স্থাপিত হয় এশিয়ার সর্ববৃহৎ এই কাগজ কল, যার প্রধান কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয় পার্বত্য চট্টগ্রামে উৎপাদিত বাঁশ। প্রতিষ্ঠার দুই বছর পর ১৯৫৩ সালের ১৬ অক্টোবর বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যায় এই প্রতিষ্ঠানটি।
শুরুতে লাভজনক হলেও কালের পরিক্রমায় নানা বাস্তবতা ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণে লোকসান গুনতে শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। নব্বই দশকে এসে এর ব্যর্থতা প্রকট হয়ে উঠলে গৌরব আর ঐতিহ্য হারাতে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। এরই অংশ হিসেবে সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক কর্মচারী-কর্মকর্তা বদলির মধ্য দিয়ে ব্যয় সংকোচন নীতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করা হয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে।