বাংলাদেশের সাহানা কি বিশ্বের প্রথম ‘বৃক্ষমানবী’?
দশ বছর বয়সী সাহানা খাতুন। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের ছোট একটি গ্রামে তার বাস। সেখানে থেকে উন্নত চিকিৎসাসেবা বহুদূর। এর পরও সব দূরত্ব-বাধা কাটিয়ে সাহানাকে সঙ্গে নিয়ে বাবা এসেছেন ঢাকায়। উদ্দেশ্য, মেয়ের চিকিৎসা করা।
বিবিসির খবরে বলা হয়, চার মাস আগে সাহানার মুখে গাছের বাকলের মতো আঁচিল বের হয়। বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেননি তার বাবা। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আকারে বাড়তে থাকে আঁচিলটি।
সাহানা এখন ভর্তি রয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকদের শঙ্কা, সাহানা হয়তো বিশ্বের প্রথম ‘বৃক্ষমানবী’। তাঁরা বের করেন, সাহানার এই রোগটির নাম এপিডার্মো ডিসপ্লেশিয়া ভেরুকোফরমিস। বিশ্বের হাতেগোনা কয়েকজনই ওই রোগে আক্রান্ত। এই রোগটিতে আক্রান্ত হলে হাতে ও পায়ে গাছের বাকল ও শিকড়ের মতো অংশ বের হয়।
বাংলাদেশে এই রোগ এটাই প্রথম নয়। খুলনার পাইকগাছার ২৫ বছর বয়সী যুবক আবুল বাজানদার এক দশক ধরে ‘বৃক্ষমানব’ নামে পরিচিত বিরল রোগে ভুগছিলেন। এর ফলে তাঁর দুই হাত এবং পায়ের কিছু অংশ বিকৃত হয়ে অনেকটা গাছের শিকড়ের মতো রূপ নিয়েছিল।
বাজানদারের দুই হাত ও পায়ে প্রথমে ছোট ছোট আঁচিল হয়েছিল। এর পর সেগুলো ক্রমে গাছের শিকড়ের মতো রূপ নেয়। বিরল এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর ১০ বছর ধরে হোমিওপ্যাথিসহ নানা চিকিৎসা করান তিনি।
ভারতেও গিয়েছিলেন বছর পাঁচেক আগে। সেখানকার চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিলেও অর্থের অভাবে তখন সেটি করা হয়নি। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ধাপে ধাপে ১৬টি অস্ত্রোপচারের ফলে আবুল বাজানদার অনেকটাই স্বাভাবিক হন। তাঁর হাতে গাছের মতো শিকড়গুলো আর নেই।