ভৈরব-টঙ্গী রেলপথ : এক বছরে ৭১ জনের মৃত্যু
টঙ্গী-ভৈরব-বাজিতপুর রেলপথে গত এক বছরে ট্রেনে কাটা পড়ে ৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভৈরব-টঙ্গী ও ভৈরব-বাজিতপুর রেলপথে ভৈরব রেলওয়ে থানার সীমানায় চলাচলকারী বিভিন্ন আন্তনগর, মেইল ও লোকাল ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে ওই সব মানুষের মৃত্যু হয়।
নিহতদের বেশির ভাগেরই পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। ফলে ময়নাতদন্ত শেষে অজ্ঞাতপরিচয় বা বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করা হয় তাদের।
ভৈরব রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মজিদ এনটিভি অনলাইনকে জানান, ট্রেনে ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণই ওই সব ব্যক্তির মৃত্যুর প্রধানতম কারণ।
ভৈরব রেলওয়ে থানা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে ভৈরব রেলওয়ে থানার সীমানার ভেতর ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে ৫৩ জন পুরুষ, ১৫ জন নারী ও তিনজন শিশুসহ মোট ৭১ ব্যক্তি মারা যান। এদের অধিকাংশেরই পরিচয় জানা যায়নি। যাত্রীদের অসতর্কতা, ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ, দুই বগির সংযোগস্থলে বসা এবং দরজার হাতলে ঝুলন্ত অবস্থায় যাতায়াত করার ফলে এসব দুর্ঘটনা ঘটে বলে দাবি পুলিশের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভৈরব রেলওয়ে থানার সীমানায় ভৈরব-টঙ্গী ৭০ কিলোমিটার ও ভৈরব-সরারচর পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার রেলপথে ছোট-বড় মোট ১৯টি স্টেশন রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের আধুনিকায়নসহ সেবার মান বৃদ্ধি পাওয়ায় যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে অনেক। বর্তমানে এ পথে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। কিন্তু যাত্রীর তুলনায় বগি ও আসনের বরাদ্দ অপ্রতুল হওয়ায় অনেকে বাধ্য হয়ে ট্রেনে ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত করে থাকেন। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের লোকজন বিনা টিকেটে ভ্রমণের ইচ্ছায় ট্রেনের ছাদে, বগির মাঝখানে ও হাতলে ধরে যাতায়াত করে থাকেন। ফলে ওই সব লোক দুর্ঘটনার চরম ঝুঁকিতে থাকেন এবং প্রায়ই তাঁরা দুর্ঘটনার শিকার হন।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, অনেক সময় দুর্বৃত্তরা মানুষ হত্যা করে রেললাইনে লাশ ফেলে দিয়ে যেতে পারে। তাঁদের দাবি, মৃতদেহ উদ্ধারের পর অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে দাফন সম্পন্ন করে ক্ষান্ত না হয়ে আরো তদন্ত করলেই হয়তো অনেক অজানা রহস্য উন্মোচিত হতো। পরিচয় বের হয়ে আসত অনেক অচেনা মৃত ব্যক্তির।
তবে বাংলাদেশ রেলওয়ে পুলিশের তৎপরতায় এ রেলপথে অস্বাভাবিক মৃত্যুর হার অনেকাংশে কমে এসেছে বলে দাবি করেছেন ভৈরব রেলওয়ে থানার ওসি আবদুল মজিদ। ট্রেনে ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ, স্টেশন এলাকায় ওভারব্রিজ ব্যবহার এবং বিনা টিকেটে ট্রেনে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে যাত্রীসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।