শোকে বাকরুদ্ধ স্ত্রী, মূর্ছা যাচ্ছেন মা

সেনাসদস্য নীল কণ্ঠ হাজংয়ের মৃত্যুর খবর শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তাঁর স্ত্রী সঞ্চিতা হাজং। তিনি ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে সেনা সদর দপ্তর থেকে সঞ্চিতা হাজংকে ফোন করে নীলকণ্ঠের মৃত্যুর সংবাদটি দেওয়া হয়। খবর শোনার পর থেকেই বাকরুদ্ধ হয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন সঞ্চিতা। নাওয়া-খাওয়া সব ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। বিছানায় পড়ে আছেন। চোখ খুললেই স্বামীর জন্য আহাজারি করছেন। পরক্ষণেই আবার মূর্ছা যাচ্ছেন। স্বজন আর প্রতিবেশীরা সঞ্চিতাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। শোকে যে সবাই কাতর!
এদিকে একই সঙ্গে খবর যায় সুনামগঞ্জে নীলকণ্ঠ হাজংয়ে বাড়িতেও। কিন্তু তাঁর মাকে এখন পর্যন্ত ছেলের মৃত্যু সংবাদ জানানো হয়নি। বলা হয়েছে, ছেলে অসুস্থ। এই খবরেই বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা অবন্তি হাজং। ছেলের জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন তিনি।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালির রাজধানী বামাকোতে জঙ্গি হামলায় নীলকণ্ঠ হাজং নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরেক বাংলাদেশি সেনাসদস্য সিরাজুল ইসলাম। স্থানীয় সময় সোমবার জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। নিহত ও আহত সেনাসদস্যের নাম জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আন্তবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
নীলকণ্ঠ হাজং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে মালিতে যান গত ১৮ মে। এর তিনদিন আগে বাড়িতে এসে মা-বাবার আশীর্বাদ নিয়ে যান। মালি পৌঁছে আবার ফোন করেন বাড়িতে। বাবাকে জানান নিরাপদে পৌঁছার খবর। সঞ্চিতা বিশ্বম্ভরপুরের কাইতকোনা গ্রামে নিজের বাবার বাড়িতে স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ পান।
নীলকণ্ঠ হাজংয়ের বাড়ি সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার গিলাগরা গ্রামে। আর সঞ্চিতা দেবী হাজংয়ের বাবার বাড়ি জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার কাইতকোনা গ্রামে।
নীলকণ্ঠ হাজংয়ের মামা ধরমপাশা উপজেলা ট্রাইবাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আশুতোষ হাজং জানান, ২০০৩ সালে সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দেন নীলকণ্ঠ। তাঁরা চার ভাই, এক বোন। সকালে তাঁর বাবা রিজেন্দ্র হাজংকে ছেলের মৃত্যু খবর জানানো হয়েছে। রিজেন্দ্র হাজং জানান, চারদিন আগে ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে। আর কোনো কথা হয়নি।