যুদ্ধাপরাধী মান্নানের জানাজা পড়ানোয় ইমাম বরখাস্ত
যুদ্ধাপরাধী গাজী আবদুল মান্নানের জানাজা পড়ানোর দায়ে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের ইমাম মোবারক হোসেন বুলবুলকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিবাদ ও বাধার মুখে নিজ বাড়ির উঠানে পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের অংশগ্রহণে রাজাকার কমান্ডার আবদুল মান্নানের জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
সেই জানাজায় ইমামতি করেন ইমাম মোবারক হোসেন বুলবুল। এর পরই উপজেলা প্রশাসন তাঁকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয় বলে এনটিভি অনলাইনকে জানান করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমা আরা।
ইউএনও বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষের আবেগ-অনুভুতি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে দুটি স্থানে জানাজা অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। কিন্তু উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের ইমাম মোবারক হোসেন বুলবুল জানাজা পড়ানো উচিত হয়নি। তাই তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
আগামীকাল মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদের জরুরি সভা ডেকে ইমামকে নিয়ম অনুযায়ী স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে বলেও জানান আসমা আরা।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গাজী আবদুল মান্নান (৮৯) মারা যান। নারায়ণগঞ্জ জেলার কাঁচপুর এলাকায় এক আত্মীয়র বাড়িতে ভোরে তিনি মারা যান বলে এনটিভি অনলাইনকে জানান করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) জাকির রাব্বানী।
গত বছরের ৩ মে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল করিমগঞ্জ উপজেলার চার চিহ্নিত রাজাকারের ফাঁসির দণ্ডাদেশ এবং একজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন।
ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত চার রাজাকার হচ্ছেন রাজাকার কমান্ডার গাজী আবদুল মান্নান, মধ্যপাড়া গ্রামের অ্যাডভোকেট এ টি এম শামসুদ্দিন আহমেদ, তাঁর ভাই সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন এ টি এম নাসির উদ্দিন আহমেদ এবং খুদির জঙ্গল গ্রামের হাফিজ উদ্দিন। এ ছাড়া আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত হচ্ছেন হাইদনখালি গ্রামের আজহারুল ইসলাম।
এঁদের মধ্যে শামসুদ্দিন আহমেদ কারাগারে আটক আছেন এবং বাকি চারজন পলাতক রয়েছেন। শামসুদ্দিন আহমেদ পালিয়ে থাকা অবস্থায় ২০১৪ সালের ২৭ নভেম্বর পুলিশের হাতে আটক হন।