সিরাজগঞ্জে বিএনপির দুই প্রার্থীকে নিয়ে নেতাকর্মীদের ক্ষোভ
সিরাজগঞ্জের কাজীপুর পৌরসভার নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ও বেলকুচিতে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার পরও আপিল না করায় নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
নেতাকর্মীদের অভিযোগ, আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে একজন মনোনয়নপ্রত্র প্রত্যাহার ও অপরজন সুযোগ থাকার পরও আপিল করেননি। এতে বিএনপি দুই প্রার্থী দলের ক্ষতি ও ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নেতারা।
আগামী ১৬ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ ও কাজীপুরে পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই পাঁচটি পৌরসভায় বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থীরা হলেন সাইদুর রহমান বাচ্চু (সিরাজগঞ্জ সদর), মো. আল-আমিন (কাজীপুর), আজাদ হোসেন (উল্লাপাড়া), জাহিদুল ইসলাম (রায়গঞ্জ), হাজী আলতাফ হোসেন প্রামাণিক (বেলকুচি)।
এই পাঁচ পৌরসভার মধ্যে কাজীপুরের আল-আমিন মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। বেলকুচির হাজী আলতাফ হোসেন প্রামাণিক হলফনামায় মামলার কথা উল্লেখ না করা এবং স্থাবর- অস্থাবর সম্পত্তির তথ্য সঠিক না থাকায় মনোনয়রপত্র বাতিল ঘোষণা করে রিটার্নিং কর্মকর্তা। এরপর তিনি আর আপিল করেননি। এতে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু হয় নানা আলোচনা সমালোচনা।
এই দুটি পৌরসভায় বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এটি দলের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। মোটা অংকের টাকা লেনদেনের মাধ্যমে কাজীপুরের প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ও বেলকুচির প্রার্থী আপিল করা থেকে বিরত ছিলেন। আর এদের সহযোগিতার জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির এক নেতা, জেলা বিএনপি ও কাজীপুর উপজেলা বিএনপির তিন নেতার নাম বলাবলি করছেন অনেকে।
কাজীপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক সেলিম রেজা বলেন, ‘কাজীপুর উপজেলা বিএনপির নেতাদের মতামত না নিয়ে আল-আমিনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তিনি মনোনয়ন পাওয়ার পরও কারো সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। কাজীপুরে বিএনপির রাজনীতি ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পর বিএনপির নির্যাতিত নেতাকর্মীরা শত বাধার পরও উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে মাঠে ছিলেন। আর পৌরসভার নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার দুঃখজনক ঘটনা।’
এ বিষয়ে বিএনপির প্রার্থী আল-আমিন বলেন, ‘আল্লাহর ওয়াস্তে মাফ চাই। কী কারণে আমি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছি তা আমি বলতে পারব না।’
বেলকুচি উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতা কারো সঙ্গে আলোচনা না করে হাজী আলতাফ হোসেন প্রামাণিককে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায় ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে বিএনপির প্রার্থী আঁতাত করে ইচ্ছাকৃতভাবে মনোনয়নপত্রে তথ্য ভুল দিয়েছেন। যাতে তাঁর মনোনয়ন বাতিল হয়। বাতিল হওয়ার পরও তিনি আপিল করেননি। এ বিষয়ে আমরা আগামী সাপ্তাহে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাব।’
বেলকুচিতে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাজী আলতাফ হোসেন প্রামানিক মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।