সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি মনে করে ৯৪ ভাগ মানুষ : সুজন
৯৪ শতাংশ মানুষই মনে করে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। এমন তথ্য উঠে এসেছে বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) ফেসবুকভিত্তিক জরিপের ফলাফলে। সুজন বলছে, নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার বিষয়টি দৃশ্যমান ছিল না। এটি লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে যাবে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ীদের তথ্য উপস্থাপন ও নির্বাচন মূল্যায়ন বিষয়ে আজ সোমবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জরিপের তথ্য তুলে ধরে সুজন।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে সুজনের যে দীর্ঘ মূল্যায়ন তুলে ধরা হয়েছে, সেটি মূলত বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এযাবৎকালের যতগুলো মূল্যায়ন করেছেন, সেটিরই সারসংক্ষেপ। এ ক্ষেত্রে সুজন জরিপের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মতামতও জানার চেষ্টা করেছে। সুজনের ফেসবুকভিত্তিক ওই জরিপে অংশ নেয় চার হাজার ৩০০ জন।
ফলাফল অনুযায়ী, ৯৪ শতাংশ মানুষই মনে করেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। সুজনের মতে, নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের এমন নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া নির্বাচনের দিন দেখা যায়নি বলেই ঢাকার ওই নির্বাচনকে আপাতদৃষ্টিতে শান্তিপূর্ণ মনে হয়েছে।
সুজনের প্রধান সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বলেন, ‘জরিপে আমরা বলেছিলাম, দুই সিটিতে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে বলে আপনি মনে করেন কি না? তার মধ্যে ৯৪ শতাংশ বলেছেন, এ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য হয়নি।’
সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘অগ্নিপরীক্ষা যে ছিল, নির্বাচন কমিশনার ইভিএমের অগ্নিপরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন, তারা উত্তীর্ণ হতে পারেনি। জাতীয় নির্বাচনে আমরা দেখেছি দৃশ্যমান কারচুপি। এখন অভিযোগ উঠেছে অদৃশ্য কারচুপির কথা, যেটা লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে যাবে। এগুলোর তদন্ত হওয়া দরকার, বিহিত হওয়া দরকার।’
সুজনের এই কাজের সঙ্গে যুক্ত অন্যরাও মনে করছেন, এ রকম নির্বাচন খুব বেশিদিন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এবং যে সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা একেবারে তলানিতে পড়ে গেছে। বারবার নির্বাচনের নামে আমরা যারা ভোটার, আমাদের অপমান করা হচ্ছে। অপমানটা আমরা বেশিদিন নিতে পারব না।’
সুজনের মূল্যায়নে ঢাকা সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি বলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও এ ব্যাপারে তারা নির্বাচনের দিন রাজনৈতিকভাবে কোনো জোরালো পদক্ষেপ নিতে পারেনি।