সব আন্দোলনের স্রষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ : নানক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগ সব আন্দোলনের স্রষ্টা, সূতিকার বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। আজ রোববার ছাত্রলীগের ঢাবির হল শাখার বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আজ সকাল ১১টায় ঢাবির টিএসসিতে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পবিত্র শিক্ষার বিদ্যাপীঠ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের চিরঠিকানা, আমাদের উত্থান এখান থেকেই। এখান থেকেই আমরা ছাত্রলীগের পদপদবি পেয়েছি।
নানক বলেন, ১৩ বছর একটানা ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনা ওয়াদা করেছিলেন, দেশে ফিরে গণতন্ত্র মানুষের দোরগোড়ায় ফিরিয়ে দেবেন। সেই সংকল্প নিয়ে লড়াই করেছেন তিনি। বারবার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে তাকে। তিনি জনগণের আস্থা অর্জন করে ক্ষমতায় এসেছেন। কারো দয়ায় তিনি ক্ষমতায় আসেননি।
নানক আরও বলেন, রাস্তায় বের হলে সুন্দর চার লেনের রাস্তা, ফ্লাইওভার দিয়ে যাওয়া হয়, মেট্রোরেল হয়েছে, এক্সপ্রেসওয়ে হয়েছে। যারা রাস্তায় ঘুমাতো তারা এখন স্থায়ী বাড়িতে ঘুমায়। আজ স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাস্তব। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র শেখ হাসিনা সরকারই করে দিয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করেছে। ঢাকায় মেট্রোরেল চালু হচ্ছে। এই মেট্রোরেল প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ঢাকা তিলোত্তমা নগরীতে পরিণত হবে। ঢাকা শহরে ফ্লাইওভার হওয়ার মধ্যে দিয়ে ঢাকা সিঙ্গাপুরের মতো হয়েছে। এই পরিস্থিতি তাদের ভালো লাগে না।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, যারা দেশকে ধ্বংস করেছে, লুটপাট করেছে তাদের ভালো লাগে না। কাদের ভালো লাগে না? যারা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে দেশের বিরোধিতা করেছে, যাদের মনে সাম্প্রদায়িকতা প্রোথিত তাদের। এদের কোনো কিছুই ভালো লাগে না। তাদের ভালো লাগে না রোগে পেয়েছে। এই রোগের ওষুধ আমাদের কাছে নাই। জনগণের কাছে রয়েছে। আগামী নির্বাচনে জনগণ সে ওষুধ ব্যবহার করে তাদের বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আরও বলেন, এখন বলা হচ্ছে তাদের নেতৃত্বে একদফা ভিত্তিক জোট গঠন হবে। কাদের ভয় দেখায়? যারা আইয়ুব, ইয়াহিয়া খানকে মোকাবিলা করেছে তাদের? ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। জনগণের শক্তিই হলো শেখ হাসিনার শক্তি। জনগণের শক্তি দিয়ে এটি মোকাবিলা করা হবে। এ দেশে বিরোধী দল করতে হলে তাকেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হতে হবে।
নানক বলেন, শিক্ষাকে সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে শেখা হাসিনা সারা দেশে ৫২ পাবলিক ও ১০৮ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বে ঈর্ষণীয় দেশে পরিণত হয়েছে। আগামী জুন মাসে পদ্মা সেতু চালু করে প্রবৃদ্ধি অর্জনে আমরা নতুন মাত্রা যোগ করব।
সম্মেলনের আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনা নিষ্ঠার সঙ্গে এই দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। আজ পর্যন্ত তার কোনো দুর্নীতির কথা কেউ তুলে আনতে পারেনি। বরং আজকে বিশ্বসভায় তিনজন সৎ প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে নেত্রী শেখ হাসিনা একজন হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, তারা কীভাবে বিএনপির বন্ধু হয়? তাদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে বিশ্বাস করে। এটা কি আমাদের বিশ্বাস করতে হবে? যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিদেশে অপপ্রচার করে, অর্থ বিনিয়োগ করে, লবিস্ট নিয়োগ করে, তাদের কবর রচনা করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে এগিয়ে আসতে হবে।
সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক বলেন, যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা যাবে না মর্মে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে পরবর্তী সময়ে তা আইনে পরিণত করেছিল, তারাই এখন মানবাধিকারের কথা বলে। সব ষড়যন্ত্রের বেড়াজালকে ছিন্ন করে আমরা অসাম্প্রদায়িক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবই তুলব।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি বরিকুল ইসলাম বাধনের সভাপতিত্বে এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সাধারণ সম্পাদক রনক জাহান রাইনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।