শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে গণতন্ত্রকেই বন্দি করা হয়েছিল : তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘২০০৭ সালের এই দিনে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করার মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্রকেই বন্দি করা হয়েছিল। সেকারণে ১৬ জুলাই শুধু জননেত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস নয়, গণতন্ত্রেরও বন্দি দিবস।’
মন্ত্রী আজ সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে একথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গণতন্ত্রের মানসকন্যা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অগ্নিবীণা, যার ধমনীতে বঙ্গবন্ধুর রক্তস্রোত প্রবহমান, যার কণ্ঠে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠ প্রতিধ্বনিত হয় এবং সংকটে-সংগ্রামে যিনি অবিচল-অনির্বাণ, আমাদের প্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে এইদিনে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নানা অনিয়মের প্রতিবাদ করায়।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পিতার অপরাধে নাবালিকা কন্যাকে গ্রেপ্তার, স্বামীর অপরাধে অসুস্থ স্ত্রীকে গ্রেপ্তার – তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এ ধরনের কাজগুলোর যখন কেউ প্রতিবাদ করছিল না, আমাদের আপোষহীন জননেত্রী শেখ হাসিনা সেদিন প্রতিবাদ করেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে কণ্ঠরোধ করার জন্য, গণতন্ত্রকে বন্দি করার জন্যই সেদিন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।’
কিন্তু সেদিন যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা অনুভব করতে বাধ্য হয়েছে যে, মুক্ত শেখ হাসিনার চেয়েও বন্দি শেখ হাসিনা অনেক বেশি শক্তিশালী- এমনটা উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ সেদিন প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল এবং সেই প্রতিবাদ-প্রতিরোধের মুখে শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে তারা বাধ্য হয়েছিল। শেখ হাসিনার মুক্তিলাভের মাধ্যমে গণতন্ত্র মুক্তি পেয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষ ধস নামানো বিজয়ের মধ্য দিয়ে ২০০৮ সালে ডিসেম্বরে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসিয়েছিল।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা গত সাড়ে ১১ বছর ধরে বাংলাদেশকে সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ তাঁর নেতৃত্বে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে, খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্যে উদ্বৃত্তের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে, দারিদ্র্য ৪১ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। তাঁর নেতৃত্বে গত সাড়ে ১১ বছরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যোগ করলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পৃথিবীতে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ এবং বাঙ্গালি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পৃথিবীর সামনে মর্যাদার আসনে আসীন হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য আজকে যখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অদ্যম গতিতে এগিয়ে চলছে, তাঁর এ নেতৃত্বের জন্য বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘ, পৃথিবীর বরেণ্য নেতৃবৃন্দ যখন প্রশংসা করছে, তখনও এক-এগারোর কুশীলবরা ষড়যন্ত্রের অপচেষ্টায় লিপ্ত।’
এ সময় সরকারি কর্মচারীরা রিজেন্ট ও জেকেজির ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়ে থাকলে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অসৎ উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের কাছ থেকে কেউ যদি ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়ে থাকে বলে তদন্তে বেরিয়ে আসে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভুয়া সার্টিফিকেটধারীদের কখনো সরকার প্রণোদনা দেবে না।
তারেক জিয়াকে ফিরিয়ে আনা হবে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারেক জিয়া শাস্তিপ্রাপ্ত আসামি। তার একটি মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। আরেকটি মামলায় ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে যেহেতু আমাদের বন্দিবিনিময় চুক্তি নেই, সেজন্য আলোপ আলোচনা চলছে।’
তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি মনে করি তিনি যদি রাজনীতিবিদ হন, তারই উচিত ছিল আদালতের কাছে আত্মসমর্পণ করা। সত্যিকারের রাজনীতিবিদ কখনো আইন-আদালতকে ভয় পায় না। সত্যিকারের রাজনীতিবিদ নয় বিধায়, তারা আর কখনো রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে দেশ থেকে চলে গিয়েছিল।’