লিবিয়ায় বাংলাদেশি হত্যা : কিশোরগঞ্জের আদালতে দুই আসামির স্বীকারোক্তি
লিবিয়ায় মানবপাচারকারী চক্রের হাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার ছয়জন নিহত ও চারজন আহত হওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁরা হলেন ভৈরবের শম্ভুপুর গ্রামের মো. হেলাল মিয়া ওরফে হেলু (৪৫) ও তাতারকান্দি গ্রামের মো. খবির উদ্দিন (৪২)।
বৃহস্পতিবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. রফিকুল বারীর খাস কামরায় তাঁরা জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে হেলু, খবিরসহ গ্রেপ্তার আরেক আসামি ভৈরবের লক্ষ্মীপুর গ্রামের শহিদ মিয়াকে (৬১) বিচারকের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়।
আসামিদের আদালতে উপস্থাপনকারী সিআইডির উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান জানান, মানবপাচারে আসামিরা জড়িত থাকার কথা স্বীকারসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য প্রদান করেছে। মঙ্গলবার রাতে লিবিয়ায় মানবপাচারকারী চক্রের হাতে নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনায় মানবপাচারে জড়িত সন্দেহে ওই তিনজনকে আটক করে কিশোরগঞ্জের র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের একটি দল। আরেক আসামি শহিদ মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হবে।
এর আগে গত ৩১ মে মানবপাচারকারী চক্রের আরেক আসামি মো. বাহারুল আলম ওরফে বাচ্চু মিলিটারিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরদিন ১ জুন আদালতে পাঠানো হলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক মো. রফিকুল বারী।
লিবিয়ায় নিহত সাদ্দাম হোসেন আকাশের (২৫) বড় ভাই ভৈরবের সাদেকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের মো. মোবারক হোসেন গত ৩১ মে ভৈরব থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে প্রলুব্ধ ও প্রতারণার মাধ্যমে মানবপাচার করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নিহতদের ইতালি পাঠানোর নামে ফাঁদে ফেলে লিবিয়ায় অপহরণপূর্বক হত্যা ও আহত করার অভিযোগ আনা হয়। নিহত ও আহতরা স্থানীয় দালালের মাধ্যমে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশে লিবিয়া গিয়েছিলেন। তাঁরা পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তন ও সংসারের সচ্ছলতা আনতে ঘরবাড়ি, জমি-জমা বিক্রিসহ ধারদেনা করে চার/পাঁচ লাখ টাকা দালালদের দিয়ে লিবিয়ায় যান। কিন্তু ইতালি না পাঠিয়ে লিবিয়া পর্যন্ত নিয়ে তাঁদের অপহরণপূর্বক জিম্মি করে বাংলাদেশে স্বজনদের কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। নির্যাতনের একপর্যায়ে গত ২৮ মে মানবপাচারকারী ও তাদের সহযোগীদের গুলিতে ২৬ বাংলাদেশি নিহত ও ১১ জন আহত হন।