রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন : ঢাকা চায় মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়াক ইইউ
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোকে মিয়ানমারের ওপর আরো বেশি চাপ প্রয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘পরিস্থিতি আমাদের জন্য ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।’
ড. মোমেন গতকাল মঙ্গলবার আয়ারল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিমন কভেনের সঙ্গে ফোনে আলাপকালে এ বিষয়ে কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের উচিত রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব নেওয়া।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আয়ারল্যান্ড জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য নির্বাচিত হলে রোহিঙ্গা ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
অসাধারণ উদারতা
এ সময় আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সম্পূর্ণ মানবিক কারণে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে অসাধারণ উদারতা দেখিয়েছে।
‘এ বিশাল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, যা আয়ারল্যান্ডের জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশের সমান,’ যোগ করেন সিমন কভেন।
ড. মোমেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে অব্যাহত সহায়তার জন্য আইরিশ সরকারকে ধন্যবাদ জানালেও প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, গত তিন বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমার ফেরত নেয়নি।
আইরিশ মন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের নেতৃত্বের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং এ ক্ষেত্রে যৌথভাবে কাজ করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন।
আইটি এবং পোশাক খাত
এ সময় ড. মোমেন বাংলাদেশের আইটি বিষয়ে দক্ষ প্রায় ছয় লাখ নাগরিকের জন্য আয়ারল্যান্ডের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা পদ্ধতি সহজ করার জন্য আইরিশ সরকারকে অনুরোধ করেন।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকখাতে বিভিন্ন দেশের ক্রয়াদেশ বাতিলের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ড. মোমেন ।
বিদেশি ক্রেতাদের ক্রয়াদেশ বাতিলের কারণে বাংলাদেশে এ খাতে কর্মরত প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে যাদের বেশিরভাগ নারী। এ বিষয়ে বিদেশি ক্রেতাদের দায়িত্বশীল আচরণের অনুরোধ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ সময় এ কে মোমেন তৈরি পোশাকখাতে বাংলাদেশের ক্রয়াদেশ বাতিল না করার জন্য আয়ারল্যান্ডের কোম্পানিগুলোকে অনুরোধ করেন।