রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সমর্থন অব্যাহত রাখবে মিসর
বাংলাদেশে মিসরের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত হেথাম গোবাসী বলেছেন, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের নিজ মাতৃভূমিতে প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে মিসর। আজ বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে একথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
মিসরের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার জাতির পিতার পদাংক অনুসরণ করে তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চায়।
রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে মুসলিম উম্মাহর একজন ‘অনুকরণীয় নেতৃত্ব’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, যদিও ব্যবসা ও বাণিজ্যের ভিত্তিতে উভয় দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রয়েছে। তথাপি বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করতে পারস্পরিক সহযোগিতার আরও কয়েকটি ক্ষেত্র এখনও রয়ে গেছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, নিরাপদ পানি সরবরাহ, ড্যাম এবং বাঁধ নির্মাণ, পাশাপাশি পর্যটন ক্ষেত্রেও মিসর বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার কক্সবাজারে একটি বিশেষ পর্যটন অঞ্চল তৈরি করতে যাচ্ছে, যা কি না বিদেশিদের জন্যই হবে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, মিসরের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ব্যবসা সম্প্রসারিত করতে বাংলাদেশে শিল্প কারখানা স্থানান্তর করতে পারে। এখানে শিল্প স্থাপনে বাংলাদেশের সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে।
এ সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা এটি বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে করতে পারেন। বিদেশি উদ্যোক্তাদের জন্য এখানে আকর্ষণীয় বাজার থাকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা দক্ষিণ এশিয়ার বড় বাজার দখলেরও সুযোগ পাবেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় মিসর বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী সব ধরনের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের ‘জিরো টলারেন্স নীতি’রও উল্লেখ করেন।
‘ইসলামে সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই,’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার সারা দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করছে, ইসলামের মর্মবাণী সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য।
রাষ্ট্রদূত বলেন, অন্যান্য ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলোর পাশাপাশি মিসর প্রাকৃতিক গ্যাসে সহযোগিতার জন্য ‘পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় ফোরাম’ নামের একটি প্লাটফর্ম তৈরি করেছে এবং বাংলাদেশকে পর্যবেক্ষক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চমকপ্রদ অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত দুই দেশের ব্যবসায়ী এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলগুলোর মধ্যে সফর বিনিময় এবং ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব নকিব আহমেদ চৌধুরী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।