রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাব আছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাব আছে। এ বিষয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে দ্বিপাক্ষিক, বহুপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমেও চেষ্টা চলছে।
তবে এই ইস্যু নিয়ে রাশিয়া ও চীন তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতি চায় না বলে জানান আবদুল মোমেন। মিয়ানমারের নির্বাচনের পর আবারো ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরুর বিষয়ে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আজ বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘মিয়ানমার বলেছে যে তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে। কিন্তু প্রত্যাবাসনের জন্য দুটি তারিখ দেওয়ার পরেও তারা কাউকে ফেরত নেয়নি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমার কোনো চাপ অনুভব করে না এবং তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে বাংলাদেশের আহ্বানে সাড়া দেয় না। এ বিষয়ে আমরা যদি শতবার জানতে চাই, তারা দুইবার জবাব দেয়।’
রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার জন্য মিয়ানমার দুইবার তারিখ দেয় এবং বাংলাদেশ তখন পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (মিয়ানমার) যাচাই-বাছাই শেষে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি।’
ড. মোমেন বলেন, মিয়ানমার ইউরোপীয় দেশগুলোসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা করছে এবং বিনিয়োগ পাচ্ছে।
‘রাশিয়া এবং চীন সবাইকে দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমস্যা সমাধানে উৎসাহিত করেছে। সমাধানের জন্য আমরা দ্বিপক্ষীয়, ত্রিপক্ষীয় এবং বহুপক্ষীয়- সব ফ্রন্টে নিযুক্ত আছি,’ বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, চীন স্বেচ্ছায় বাংলাদেশকে সহায়তা করতে এসেছিল। তবে এর অর্থ এই নয় যে মিয়ানমার সব সময় চীনের কথা শুনবে।
ড. মোমেন বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রা উন্নয়নের দিকে বেশি মনোনিবেশ করছে। তবে বাংলাদেশের লক্ষ্য যত দ্রুত সম্ভব তাদের ফিরিয়ে দেওয়া।
সরকার এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করবে কিন্তু এখনও এর কোনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কোনো বড় ঘোষণা না করে তাদের ছোট ছোট দলে বিভক্ত করে স্থানান্তর করব।’
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও এনজিও কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করতে বাধা সৃষ্টি করছে বলেও জানান তিনি।
করোনার কারণে কতজন প্রবাসী দেশে ফেরত এসেছেন জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, প্রায় দেড় লাখের মতো প্রবাসী দেশে এসেছেন। তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য প্রাবসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে ৭০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।