রুম্পার বন্ধু সৈকত ৪ দিনের রিমান্ডে
বেসরকারি স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পা হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর বন্ধু আবদুর রহমান সৈকতের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ এই আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) নিজাম উদ্দিন।
বিকেলে জিআরও এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আজ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক শাহ মো. আকতারুজ্জামান ইলিয়াস আসামিকে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক চার দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।
সৈকতের আইনজীবী আবদুল হামিদ ভূঁইয়া শুনানিতে বলেন, ‘সৈকত এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন। এক সপ্তাহ আগেই তাঁর বাবা ও চাচা মারা গেছেন। শারমিনের মৃত্যু আত্মহত্যা না হত্যা, এ নিয়ে ধোঁয়াশা আছে। এমন অবস্থায় তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।’
এর আগে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় খিলগাঁও এলাকা থেকে সৈকতকে আটক করা হয়। সে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিবিএ বিভাগের ৫৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি পরিবারের সঙ্গে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় ভাড়া থাকেন। পরিবার ও সহপাঠীদের দাবি, রুম্পার সঙ্গে সৈকতের গত বেশকিছু দিন ধরে সম্পর্ক চলছিল। কিন্তু সম্প্রতি তাদের সম্পর্কের অবনতি হয়; যার জের ধরে দুজনের মধ্যে মনোমানিল্যের বিষয়টিও জানতেন রুম্পার সহপাঠীরা।
এর মধ্যেই রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর সার্কুলার রোডের আয়েশা শপিং কমপ্লেক্সের পেছনের দুটি ভবনের মাঝখান থেকে গত বুধবার রাতে রুম্পার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রুম্পার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার বিজয়নগর গ্রামে। তাঁর পরিবার মালিবাগের শান্তিবাগের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের বাসায় ভাড়া থাকত। রুম্পার বাবা রোকন উদ্দিন পুলিশের পরিদর্শক হিসেবে হবিগঞ্জের একটি ফাঁড়িতে কাজ করেন।
পরে পরিবার গিয়ে রুম্পার লাশ শনাক্ত করে। ওই ভবন দুটির একটিতে নারী হোস্টেল, অন্যটিতে পুরুষ হোস্টেল। এর বাইরে পারিবারিক বাসাও আছে। পুলিশের ধারণা, পুরুষ হোস্টেলের একটি কক্ষে হয়তো রুম্পাকে হত্যা করা হয়েছে। রুম্পার মৃত্যুর ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রমনা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল খায়ের বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন।
রুম্পার লাশের ময়নাতদন্তের ব্যাপারে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রুম্পাকে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে, এটা নিশ্চিত। প্রথম যখন আমি লাশ দেখি, তখন তাঁর দুই পা ও হাত ভাঙা দেখেছি। মাথায় আঘাত পেয়েছে। চোখে-মুখে রক্ত ছিল। তবে হত্যার আগে ওই তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমরা আলামত সংগ্রহ করেছি। আলামত পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে আসল ঘটনা জানা যাবে।’