রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের আন্দোলন এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান গণতন্ত্র মঞ্চের

সরকারের পদত্যাগ ও একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং সরকারের উদ্যোগে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করে রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের যে আন্দোলন শুরু হয়েছে তা এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষনেতারা। আজ শনিবার (১১ মার্চ) দুপুরে বিদ্যুতের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতির প্রতিবাদ এবং বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠাসহ যুগপৎ আন্দোলনের ১৪ দফা দাবিতে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে পল্টন মোড়ে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে নেতারা এ আহবান জানান।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূমের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমনের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী, গণ-অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট কে এম জাবির প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, ‘১৪ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে এই সরকারের পদত্যাগ ও একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং সরকারের উদ্যোগে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করে সাংবিধান সংস্কার করে, রাষ্ট্র ব্যবস্থা সংস্কারের পথে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে তাতে সবাইকে অংশ নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটি আগামী মিটিং করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিশাল বহর নিয়ে জনগণের টাকায় দেশ বিদেশে ঘুরছেন তার ক্ষমতা টিকেয়ে রাখার জন্য, কিন্তু তাতে মানুষের কী লাভ হয়েছে। সরকার যতই তালবাহানা করুক, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। গণতন্ত্র মঞ্চসহ যুগপৎ আন্দোলনে যারা আছেন, কেউ তার অধীনে নির্বাচনে যাবে না।’
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সংগঠক মাসুদ রানাকে গতকাল রাতে আশুলিয়ায় হামলা করে আহত করা হয়েছে। সারা দেশে মানুষকে হামলা-মামলা করে আন্দোলন থেকে বিরত রাখতে চায়, কিন্তু মানুষের সামনে আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এই সরকারের পতন নিশ্চিত করা ছাড়া উপায় নেই। সারা দেশের মানুষের কোথাও কোনো নিরাপত্তা নেই, দেশের মানুষকে গ্যাস চেম্বারে তুলে রেখেছে। এই সরকার সারা দেশের মানুষকে বন্ধক রেখে তাদের অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে চায়। এদের পতন নিশ্চিত করতে হবে।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী বলেন, ‘বর্তমান রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ক্ষমতার সুষ্ঠু বণ্টন নেই। গণতন্ত্র মঞ্চ স্পষ্ট করেছে রাষ্ট্রের ক্ষমতা কার কাছে কতোটা থাকবে, কীভাবে বণ্টন হবে।’
গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক বলেন, ‘বর্তমান সরকার উন্নয়নের নামে লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে, এবং পাচার করছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম এমন পর্যায়ে গেছে, সাধারণ মানুষের সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়েছে। বিরোধী দলের আন্দোলন সংগ্রাম ব্যাহত করতে সরকার সারা দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে শান্তি সমাবেশের নামে অশান্তি তৈরি করছে। অবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’
এই সময় উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়ছার, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল পাটোয়ারী, জেএসডির সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন মন্টু, গণ-অধিকার পরিষদের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মীর মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রচার ও মিডিয়া সমন্বয়ক সৈয়দ হাসিব উদ্দিন হোসেন, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ মামুন, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড, সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সভাপতি মোশাররফ হোসেন, রাষ্ট্র সংস্কার শ্রমিক আন্দোলনের সমন্বয়ক শাহ আলম হোসাইন প্রমুখ।