মানিকগঞ্জের তিন উপজেলায় লকডাউনের সিদ্ধান্ত
আশঙ্কাজনক হারে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ায় মানিকগঞ্জ জেলায় আবারও লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী মানিকগঞ্জ সদর, সাটুরিয়া ও সিংগাইর উপজেলায় সর্বোচ্চ কঠোরভাবে লকডাউন পালন করা হবে বলে জানান করোনা প্রতিরোধে গঠিত জেলা কমিটির প্রধান এবং জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস।
আজ শুক্রবার দুপুরে জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস তাঁর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত আদেশের একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এটি বলবৎ থাকবে বলে জানান তিনি। জেলা প্রশাসক বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে গঠিত জেলা কমিটির সদস্যদের মতামত এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের নির্দেশনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
গণবিজ্ঞপ্তির নির্দেশনা অনুযায়ী, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া জনসাধারণকে ঘর থেকে বের হতে বারণ করা হয়েছে। যৌক্তিক কারণ ছাড়া রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কেউ বাইরে থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শপিংমল, দোকানপাট ও কাঁচাবাজার যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালন করে খোলা রাখা যাবে। তবে আবশ্যিকভাবে বিকেল ৪টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে।
এছাড়া জেলার বাইরে যাওয়া যাবে না এবং অন্য জেলা থেকে এই জেলায় প্রবেশ করতে পারবেন না কেউ। যৌক্তিক কারণে জেলার বাইরে থেকে আগত ব্যক্তিদের অবশ্যই নিজ ঘরে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
জনসংখ্যা এবং নমুনা পরীক্ষার আনুপাতিক হারে আক্রান্তের পরিসংখ্যান অনুযায়ী মানিকগঞ্জ সদর, সাটুরিয়া এবং সিংগাইর উপজেলাকে হটস্পট ধরা হয়েছে। এ কারণে গত সোমবার করোনা প্রতিরোধে গঠিত জেলা কমিটির প্রধান এবং জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌসের আহ্বানে তার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ, পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীমসহ কমিটির সদস্যরা ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন। জেলায় করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কঠোরভাবে লকডাউন পালনের সিদ্ধান্ত নিতে অনুরোধ জানান তারা।
সরকারি হিসাব মতে, এ পর্যন্ত মোট চার হাজার ১০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে তিন হাজার ৭১৬টি রিপোর্ট পাওয়া গেছে। যাতে পজিটিভ পাওয়া গেছে ৩৮৭ জনের দেহে।
এর মধ্যে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ১১০ জন, সিংগাইরে ৭৬ জন, সাটুরিয়ায় ৭৪ জন, ঘিওরে ৫২ জন, হরিরামপুরে ৩৩ জন, শিবালয়ে ২৭ জন ও দৌলতপুরে রয়েছে ১১ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৩২ জন এবং নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছে ২৪৮ জন। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন ১০৪ জন এবং মারা গেছে তিনজন।
১৯ এপ্রিল মানিকগঞ্জ জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু সরকারি আদেশে ৩১ মে থেকে লকডাউন শিথিল করলে দোকানপাট, অফিস আদালত ও গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়। এরপর থেকে মানিকগঞ্জে করোনা শনাক্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকে।