মাথা ন্যাড়া করার পরিকল্পনা ছিল সাহেদের : র্যাব
বহুল আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতাল প্রতারণা মামলার প্রধান আসামি ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ বুধবার ভোর ৫টা ১০ মিনিটে তাঁকে সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভারতে পালানোর চেষ্টার সময় সাহেদ জিন্সের প্যান্ট ও নীল রঙের শার্টের ওপর কালো রঙের বোরকা পরে ছিলেন। তাঁর মাথার সাদা চুল ছিল কালো।
এ নিয়ে সকালে সাতক্ষীরা জেলা স্টেডিয়ামে সংক্ষিপ্ত ব্রিফিং করেন র্যাবের অপারেশন শাখার অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) কর্নেল তোফায়েল আহমেদ। এ সময় তিনি বলেন, গ্রেপ্তার এড়াতে সাহেদ মাথার সাদা চুল কালো করেছিলেন। গোঁফও কেটে ফেলেছিলেন। এ ছাড়া তিনি মাথা ন্যাড়া করার পরিকল্পনা করেছিলেন।
র্যাব কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘(সাহেদের ভারত পালানোর চেষ্টা) স্থানীয় বাচ্চু দালালকে আমরা সন্দেহ করছি। সে সীমানা পার হয়ে ভারতে যাওয়ার পথে আমরা তাঁকে গ্রেপ্তার করি। নৌকায় করে ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ।’
সাতক্ষীরায় কত দিন অবস্থান করছিলেন—এমন প্রশ্নের জবাবে কর্নেল তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমরা তাঁকে (সাহেদ) দীর্ঘ সময় অনুসরণ করছি, ঘন ঘন তিনি অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন। অবশেষে তাঁকে সাতক্ষীরার দেবহাটার কোমরপুর বেইলি ব্রিজের দক্ষিণ পাশের লবঙ্গবতী নদীর পাড় থেকে গ্রেপ্তার করি আমরা।’
চিকিৎসাসেবা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গত ৬ জুলাই বিকেল থেকে রাত অবধি উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালের মূল কার্যালয়ে প্রথমে অভিযান পরিচালনা করেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেখান থেকে অভিযান শেষে হাসপাতালটির মিরপুর শাখায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় হাসপাতালটির আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটক করা হয়।
এরপর ৭ জুলাই রাজধানীর উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের কোভিড ডেডিকেটেড রিজেন্ট হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয় র্যাব-১। এ ছাড়া উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের রিজেন্ট গ্রুপের মূল কার্যালয়ও সিলগালা করা হয়। ৭ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করা হয়।
রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটি প্রায় সাড়ে চার হাজার করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট দিয়েছে। একজন কম্পিউটার অপারেটর বসে বসে সাড়ে চার হাজার রিপোর্ট তৈরি করেছেন। মনগড়া রিপোর্ট পজিটিভ-নেগেটিভ দিয়েছেন।
তা ছাড়া মোট ১০ হাজার রোগীর করোনা টেস্টের নমুনা সংগ্রহ করে রিজেন্ট হাসপাতাল। মাত্র চার হাজার ২৬৪টি নমুনা সরকারিভাবে টেস্ট করে রিপোর্ট দেয়। এ ক্ষেত্রে ভয়াবহ প্রতারণার কৌশল গ্রহণ করে রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কারো জ্বর থাকলে তাকে পজিটিভ আর জ্বর না থাকলে নেগেটিভ রিপোর্ট প্রদান করে।