মগবাজারে ভবনে আগুন, শিশুসহ তিনজন নিহত

রাজধানীর মগবাজারের দিলু রোডে একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডে শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছন। এ সময় দগ্ধ হয়েছেন আরো দুজন। এ ছাড়া ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়েছেন শিশুসহ আরো চারজন। তাঁরা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। আজ বৃহস্পতিবার ভোররাত ৪টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ভবনের গ্যারেজ থেকে এ আগুন লাগে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, আগুনে দুজন দগ্ধ হয়েছেন। এ ছাড়া চারজন ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়েছেন। তাঁরা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
নিহতদের মধ্যে দুজন হলো লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম নন্দনপুর এলাকার মোহম্মদ উল্লাহর ছেলে আবদুল কাদের লিটন (৪০) ও চার বছর বয়সী শিশু এ কে এম রুশদি। তারা দুজনই ওই ভবনে থাকত। নিহত আরেকজনের নাম জানা যায়নি।
দগ্ধ দুজন হলেন নিহত রুশদির বাবা শহিদুল কিরমানি রনি (৪০) ও মা জান্নাতুল ফেরদৌস (৩৮)। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চারজন হলেন কাঁচামাল ব্যবসায়ী মনির হোসেন (৪০), তাঁর স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার (৩০), তাঁদের ৯ মাস বয়সী ছেলে মাহমুদুল হাসান ও মাহাদী হাসান রিফাত (৯)।

নিহত শিশু রুশদির দাদা এ কে এম শহিদুল্লাহ জানান, রুশদি স্থানীয় একটি স্কুলে প্লে শ্রেণিতে পড়াশোনা করত। দগ্ধ জান্নাতুল ও শহিদুলের একমাত্র সন্তান সে। তাঁরা নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ইটনা গ্রামের বাসিন্দা।
নিহত আবদুল কাদের লিটনের শ্যালক জহির আলম জানান, লিটন ওই ভবনের নিচতলার একটি ছোট কক্ষে থাকতেন। ভবনের দোতলায় ক্লাসিক ফ্যাশন ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি বায়িং হাউসের অফিস সহকারী ছিলেন। তিনি আট থেকে দশ বছর ধরে সেখানে চাকরি করেন। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে গ্রামে থাকে। আগুন লাগার পর ধোঁয়ার কারণে রুমের গেট খুলতে না পাড়ায় শ্বাস আটকে তিনি মারা যান।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক সামন্তলাল সেন জানান, দগ্ধ দুজনের মধ্যে একজন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ও আরেকজন হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) চিকিৎসাধীন। জান্নাতুলের শরীরের ৯৫ শতাংশ ও শহিদুলের শরীরের ৪৩ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাঁদের দুজনেরই শ্বাসনালি মারাত্মকভাবে পুড়ে যাওয়ায় অবস্থা গুরুতর।

সামন্তলাল সেন আরো বলেন, ‘এ অবস্থা থেকে রোগীর রিকভারি করার সম্ভাবনা খুব কম। তবুও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
দগ্ধ শহিদুলের ছোট বোন নাসরিন আক্তার বলেন, ‘আমি কেরানীগঞ্জে থাকি। ফোনের মাধ্যমে খবর পাই, ভাই ও ভাবি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়েছে। আমার ভাই ও ভাবি একটা কোম্পানিতে চাকরি করে। তাঁরা ওই বিল্ডিংয়ের তিনতলায় ভাড়া থাকে। তাঁদের একটাই সন্তান। শুনেছি ফায়ার সার্ভিস তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।’
অসুস্থ মনির হোসেন বলেন, ‘রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম। কীভাবে আগুন লাগে, বলতে পারি না। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সিঁড়ি দিয়ে বাসায় ঢুকে আমাদের উদ্ধার করেন।’