মং সার্কেলের তিন দিনব্যাপী রাজপুণ্যাহ শুরু
পার্বত্য চট্টগ্রামে মং সার্কেলের ঐতিহ্যবাহী রাজস্ব আদায়ী রাজপুণ্যাহ আজ শুক্রবার শুরু হয়েছে। এটি মং সার্কেলের অষ্টম রাজ পরিবারের ষষ্ঠ রাজপুণ্যাহ। খাগড়াছড়ি সদরের মহালছড়ায় রাজার মাঠে এ রাজপুণ্যাহ শুরু হয়।
উপমহাদেশের সর্বকনিষ্ট রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরীর হাতে নজরানা ও রাজস্ব তুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী রাজপুণ্যাহর মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। আজ সকালে ঐতিহ্যবাহী পোশাক-পরিচ্ছদ ও আবহে আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে রাজপুণ্যাহস্থলে আগমন করেন মং সার্কেলের চিফ সাচিং প্রু চৌধুরী। মঞ্চে আসার পর তার প্রতি আনুগত্য স্বরূপ তলোয়ার প্রদান করেন প্রজাদের পক্ষে একজন হেডম্যান।
পাহাড়িদের ঐহিত্যবাহী নৃত্য পরিবেশনের পর রাজপুণ্যাহর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শরণার্থী পুনর্বাসন বিষয়ক টাস্কফোর্সের প্রতিমন্ত্রী মর্যাদার চেয়ারম্যান সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুই প্রু চৌধুরী। রাজপুণ্যাহ অনুষ্ঠানে সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সভাপতি কংজরী চৌধুরীসহ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, হেডম্যান-কার্বারি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরী তার বক্তব্যে ১৯০০ সালের হিট্র্যাক্টস ম্যানুয়েল অধিকতর কার্যকর করা, পার্বত্য চুক্তির ধারাগুলো বাস্তবায়ন করাসহ পাহাড়ের উন্নয়নে হেডম্যান-কার্বারিদের ক্ষমতাশালী করার দাবি জানান।
পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা তিন সার্কেলের আওতায়। রাঙামাটি চাকমা সার্কেল, বান্দরবান বোমাং সার্কেল এবং খাগড়াছড়ি মং সার্কেল। মং সার্কেলের আওতাধীন ১২১ জন হেডম্যান (মৌজা প্রধান) এবং ৭০০ জন কার্বারি (পাড়াপ্রধান) রাজার কাছে জুম কর প্রদান করবেন।
আগামী রোববার নারী হেডম্যান-কার্বারিদের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে তিন দিনব্যাপী রাজপুণ্যাহ অনুষ্ঠান।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ২২ অক্টোবর এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় রাজা পাইহ্লাপ্রু চৌধুরী নিহত হওয়ার পর তাঁর সন্তান সাচিংপ্রু চৌধুরী রাজা হন।