ভৈরবে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে কৃষক হতাশ
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে উপজেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তে হতাশ হয়ে সরকারি খাদ্যগুদামে আমন ধান বিক্রিতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন কৃষক। ফলে গত ৯ ডিসেম্বর থেকে সরকারিভাবে ২৩৬ টন আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ধান কেনা শুরু করলেও স্থানীয় খাদ্যগুদামে ৪০ জন কৃষক ধান বিক্রি করেছেন মাত্র ২০ টন। অথচ আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই ধান সংগ্রহ করার সরকারি নির্দেশনা রয়েছে।
ভৈরব খাদ্যগুদামের পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান বলেন, ‘স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে ৪৭২ জন কৃষকের তালিকা দেওয়া হয়েছে। এসব কৃষককে জনপ্রতি ৫০০ কেজি (আধা টন) করে আমন ধান খাদ্যগুদামে সরকারি মূল্যে সরবরাহ করার কথা। সরকার এবার আমন ধান কেনার মূল্য নির্ধারণ করেছে প্রতি কেজি ২৬ টাকা। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি ধান বিক্রি হচ্ছে ১৭ থেকে ১৮ টাকায়। কিন্তু কৃষকরা আধা টন করে ধান সরকারি খাদ্যগুদামে বিক্রি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ফলে আমরা গুদামে ধান কিনতে পারছি না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষক মো. রফিকুল ইসলাম, জাকির হোসেন ও মজনু মিয়া দাবি করেন, উপজেলার যেকোনো ইউনিয়ন থেকে আধা টন (৪/৫ বস্তা) ধান ভৈরব বাজারের সরকারি খাদ্যগুদামে নিয়ে গেলে তিনশ থেকে চারশ টাকা রিকশা ভাড়া দিতে হয়। অথচ এ টাকা খরচে ১০/১২ বস্তা ধান পরিবহন করে ভৈরব বাজারের ধানের আড়তে নিয়ে যাওয়া যায়। এ ছাড়া গুদামে ধান দিলে একদম নির্ভেজাল ধান দিতে হয়। খোলাবাজারে বিক্রি করলে ভালো-চিটা মিলিয়ে বিক্রি করা যায়। তবে ধান বিক্রির পরিমাণ আরো বাড়িয়ে দিলে তারা গুদামে ধান বিক্রি করবেন বলে জানান।
ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলম শরীফ খান বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম এলাকার অধিকাংশ কৃষক যেন সরকারি মূল্যে ধান দিয়ে লাভবান হতে পারেন। কিন্তু ৫০০ কেজি ধান তাঁরা দিতে আগ্রহী হবেন না, এ বিষয়টি আমাদের মাথায় ছিল না। এখন পরিমাণ বাড়িয়ে তালিকাটি ঠিক করে দেওয়া হবে।’
ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুবনা ফারজানা বলেন, ‘আমরা শিগগির সভা ডেকে আগের করা তালিকাটি সংশোধন এবং এক টন করে ধান কেনার সিদ্ধান্ত নেব।’