ভৈরবে তিন দিনব্যাপী সাহিত্য-সংস্কৃতি প্রতিযোগিতা
সাহিত্য-সংস্কৃতি মানুষের হৃদয়কে আলোকিত করে। মানুষকে করে তোলে দৃঢ়চেতা, মানবিক, কোমল আর সহনশীল। আর এসব হলো একজন প্রকৃত মানুষের গুণ। তাই যার মধ্যে সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রভাব যত বেশি থাকবে, তিনি তত বেশি আলোকিত মানুষ হিসেবে বিবেচিত হবেন। আর একজন আলোকিত মানুষই পারেন তাঁর চারপাশকে সুন্দর-সুকোমল সুভাসিত করতে। তাই প্রকৃত মানুষ হতে হলে সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই।
শনিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে রফিকুল ইসলাম মহিলা (অনার্স) কলেজে তিন দিনব্যাপী সাহিত্য-সংস্কৃতি প্রতিযোগিতার শেষ দিনে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন অতিথিরা। এ সময় তাঁরা আরো বলেন, দিন দিন সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চা সমাজ থেকে কমে যাচ্ছে বলেই সমাজে অস্থিরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের মধ্য থেকে মানবিকতা, সৃষ্টিশীলতা হ্রাস পাচ্ছে।
বক্তারা বলেন, পুঁথিগত বিদ্যা অর্জন করে ভালো ফলের সঙ্গে এই সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চাও করতে হবে। শিক্ষক ও বাবা-মাকে ভালোবাসতে হবে। তাঁদের আদেশ-নির্দেশ মেনে চলতে হবে। দেশপ্রেম, দেশের মানুষ, মাতৃভাষার প্রতি অকৃত্রিম মমত্ববোধ অন্তরে জাগিয়ে রাখতে হবে। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে ভূমিকা রাখতে নিজেকে তৈরি করে তুলতে হবে।
কলেজের অধ্যক্ষ শরীফ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. হান্নান মিয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুবনা ফারজানা, কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা মির্জা মো. সুলায়মান, কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মো. রফিকুল ইসলাম, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মো. জাকির হোসাইন চৌধুরী, ভৈরব প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. জাকির হোসেন কাজল প্রমুখ।
প্রভাষক মো. এনামুল হক ও একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাওদা হক শৈলির সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক মো. ফোরকান উদ্দিন, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক সাংবাদিক মো. সুমন মোল্লা, এনটিভির স্টাফ রিপোর্টার মোস্তাফিজ আমিন, একদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শিখা আক্তার প্রমুখ।
আলোচনার পর অনুষ্ঠিত হয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা। ‘জনসংখ্যা বৃদ্ধি উন্নয়নের অন্তরায় নয়’—এ বিষয়ের ওপর কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির দুটি গ্রুপ পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তাদের উপস্থাপনা তুলে ধরে। পাল্টাপাল্টি যুক্তিতর্ক আর তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে দর্শকদের মন ভরিয়ে দেয়। এ বিষয়ে বিজয়ী হয় পক্ষে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা।
কলেজের অধ্যক্ষ শরীফ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এই পর্বে বিচারকমণ্ডলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সাংবাদিক সুমন মোল্লা, মোস্তাফিজ আমিন ও বাংলাভিশনের ভৈরব প্রতিনিধি প্রভাষক সত্যজিৎ দাস ধ্রুব।
সবশেষে বিতর্ক প্রতিযোগিতাসহ তিন দিনব্যাপী সাহিত্য-সংস্কৃতি প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বিষয়ে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের উপহার হিসেবে বই তুলে দেন অনুষ্ঠান প্রধান অতিথিসহ অন্য অতিথিরা।