ভৈরবে অনুমোদনহীন স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী তৈরির দায়ে বাবা-ছেলের দণ্ড
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান অফিস সহকারী মো. শাহজাহানকে ছয় মাস ও তাঁর ছেলে মাহিদুল হক জীবনকে দেড় বছরের কারাদণ্ডসহ দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অনুমোদনহীনভাবে একটি কারখানায় স্যানিটারি ন্যাপকিন, অ্যাবডোমিনাল বেল্ট ও ডেন্টাল সামগ্রী তৈরির দায়ে তাঁদের এই শাস্তি দেওয়া হয়।
অপরদিকে ওই ভেজাল কারখানায় উৎপাদিত সামগ্রী বিক্রির দায়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থিত বন্যা ফার্মেসিকে ১০ হাজার টাকা, সততা ফার্মেসিকে ১২ হাজার টাকা ও নিরাময় ফার্মেসিকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার বিকেলে পৌর শহরের চণ্ডীবের মধ্যপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে শাহজাহান ও তাঁর ছেলে মাহিদুল হক জীবনকে আটকসহ বিপুল উৎপাদিত সামগ্রী জব্দ করে র্যাবের একটি আভিযানিক টিম। পরে আদালতের নির্দেশে জব্দ করা উৎপাদিত সামগ্রী পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের কমান্ডার রফিউদ্দীন মোহাম্মদ যোবায়ের ও ডেপুটি কমান্ডার বেলায়েত হোসেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেট লুবনা ফারজানা।
র্যাবের হাতে আটক ছেলে জীবন ও বাবা শাহজাহান উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে তাঁদের অপরাধ স্বীকার করে তাঁরা অনুতপ্ত বলে জানান।
র্যাবের কমান্ডিং অফিসার রফিউদ্দীন মোহাম্মদ যোবায়ের জানান, শাহজাহান হাসপাতালের একজন কর্মচারী হয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাঁর ছেলেকে দিয়ে অনুমোদনহীন এসব সামগ্রী তৈরি করে জনস্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলেছেন। এসব মানহীন মেডিকেল সামগ্রী শাহজাহান তাঁর সরকারি প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় চিকিৎসকদের দিয়ে প্রেসক্রাইব করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের ফার্মেসিতে ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে অবাধে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট লুবনা ফারজানা জানান, মানহীন এসব স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী সেবা গ্রহীতাদের জীবন ধ্বংস করতে পারে। তারা সরকারি অনুমোদন ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে এসব সামগ্রী তৈরি করে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করছিল। এ কারণে ভোক্তা অধিকার আইনে তাদের জেল-জরিমানা করা হয়েছে।