ভিন্ন কারণে এএসপি শিপনের পদোন্নতি হয়নি : ডিআইজি হাবিবুর
হত্যার শিকার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম শিপনের পদোন্নতি বিভাগীয় বা মানসিক সমস্যার কারণে হয়নি, এমনটা সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হাবিবুর রহমান।
আজ শুক্রবার গাজীপুরে নিহত সিনিয়র এএসপি শিপনের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিআইজি একথা বলেন।
ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ভিন্ন কারণে এএসপি আনিসুল করিমের পদোন্নতি হয়নি। চাকরিতে কারো পদোন্নতি আগে হয়, কারো পরে। এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এটা আইনি প্রক্রিয়া। আইনি প্রক্রিয়ার কারণে তাঁর পদোন্নতি হচ্ছিল না, পরবর্তীতে যথাসময়ে পদোন্নতি হয়ে যেত।’
ডিআইজি বলেন, ‘নিহত সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিম শিপনের স্ত্রীকে সম্মানজনক পেশায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) ড. বেনজীর আহমেদ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন।’
ডিআইজি হাবিবুর রহমান আজ বিকেলে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিহত সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিম শিপনের গাজীপুর শহরের বরুদা এলাকার বাসায় যান। এ সময় তিনি নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন এবং খোঁজ-খবর নেন। পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় নিহতের স্ত্রী, বাবা ও ভাই-বোনসহ স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের সান্ত্বনা দিয়ে আনিসুল করিম হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আশ্বাস দেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
এ সময় নিহতের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফাইজুদ্দিন আহমেদ, বড় ভাই রেজাউল করিম সবুজ, বোন শামসুন্নাহার সুমন ও ডা. উম্মে সালমা এবং স্ত্রী শারমিন সুলতানাসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে পুলিশ কর্মকর্তারা গাজীপুর সিটি করপোরেশনে কেন্দ্রীয় কবরস্থানে যান। সেখানে তাঁরা শিপনের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং কবর জিয়ারত ও দোয়া করেন।
ডিআইজি হাবিবুর রহমান আরো বলেন, ‘আমাদের দেশে পুলিশের জন্য নিজস্ব কোনো মানসিক হাসপাতাল নেই। পুলিশ সদস্যরা যেকোনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারেন। একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে এএসপি আনিসুল করিম শিপন চিকিৎসা নিতে সরকারি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে তিনি কমফোর্ট মনে করেননি। তাই তিনি আদাবরের ওই হাসপাতালে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে কিভাবে তিনি নিহত হয়েছেন তা ভিডিও চিত্র দেখে সবাই জানতে পেরেছেন। এ ভিডিও চিত্রের বাস্তবতা রয়েছে। সেখানে কিভাবে আনিসুলকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে তা ভিডিও চিত্রে রয়েছে।’
এ সময় তাঁর সঙ্গে গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির, র্যাব-৪-এর অধিনায়ক মোজাম্মেল আহমেদ, বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম, নরসিংদীর পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিম শিপন বরিশাল মহানগর পুলিশে (বিএমপি) সহকারী পুলিশ কমিশনার পদে কর্মরত ছিলেন। গত ৯ নভেম্বর তাঁকে চিকিৎসার জন্য রাজধানীর আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে হাসপাতালের কর্মচারীদের নির্যাতনে তিনি নিহত হন। তাঁর বাসা গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বরুদা এলাকায়। তবে তাঁদের গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সম্মানিয়া ইউনিয়নের আড়াল গ্রামে। তাঁর স্ত্রী ও সাফরান নামের চার বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।