ভাষা শেখার আগে যেসব বিষয় জানা জরুরি

কোনো ভাষা শিখতে গেলে মোটামুটি চারটি বিষয় রপ্ত করা প্রয়োজন। তা হলো বলা, শোনা, পড়া ও লেখা। তবে এই চারটি ধাপ শিখে গেলেই যে ভাষা দখলে চলে আসবে, তা ভাবা ঠিক নয়।
অনেকেরই ধারণা, কোনো বিদেশি ভাষা শিখতে হলে ভর্তি হতে হয় নানা কোর্সে। ফরাসি, ইতালিয়ান, জাপানি, জার্মান, রাশিয়ান— যে ভাষাই শেখার ইচ্ছে থাকুক না কেন, তার জন্য টাকা দিয়ে ভাষা শিক্ষা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষকের কাছ থেকে শিখতে হয়। আবার অনেক সময়ে প্রাথমিকভাবে যে ভাষা শিখতে ইচ্ছে হচ্ছিল, পরে তা জটিল লাগে কিংবা সেই ভাষার প্রতি তেমন টান অনুভূত হয় না। ফলে একগাদা টাকা দিয়ে ভর্তি হওয়ার পরেও রীতিমতো বিপাকে পড়তে হয়। বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
মনে রাখবেন, ভাষা শুধু অন্য দেশের সঙ্গে সীমারেখা ঘোচায় না, খোলে মনের দরজাও। যে দরজার বাইরে অপেক্ষা করে আছে এক সম্ভাবনাময় নতুন জগৎ। ভাষার জগৎ হচ্ছে শিক্ষার জগৎ।
ভাষা শেখার আগে যেসব বিষয় জানা জরুরি
প্রতিটি ভাষার বিভিন্ন লেভেল বা স্তর থাকে, যেমন— ইতালিয়ান ভাষায় এ-ওয়ান, এ-টু, বি-ওয়ান, বি-টু, সি-ওয়ান ও সি-টু— এমন মোটামুটি ছয়টি ভাগ রয়েছে। এ-ওয়ান একেবারে প্রাথমিক ও তুলনায় সহজ স্তর। সি-টু স্তর উত্তীর্ণ হওয়ার অর্থ ওই ভাষা সম্পর্কে নেটিভ অর্থাৎ স্থানীয় ইতালিয়ানদের মতো দক্ষতা অর্জন করা। জাপানিজের ক্ষেত্রে আবার তা উল্টো। জেএলপিটি (জাপানি ল্যাঙ্গুয়েজ প্রফিশিয়েন্সি টেস্ট) ভাগ করা হয় পাঁচটি স্তরে। জেএলপিটি ফাইভ মানে এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক ও সহজ এবং ওয়ানের অর্থ সবচেয়ে কঠিন। অর্থাৎ হিসাবটা উল্টো। স্তরের ভাগ প্রতিটি ভাষা বিশেষে আলাদা হয়।
যাঁরা ইংরেজিটা মোটামুটি জানেন, তাদের শেখার জন্য কোনো ভাষা কতটা কঠিন, তারও রয়েছে চারটি ভাগ। প্রথম স্তরে অর্থাৎ সহজে শেখা যায় ফ্রেঞ্চ, ইতালিয়ান, পর্তুগিজ, স্প্যানিশ। দ্বিতীয় ধাপে পড়ে জার্মান, ইন্দোনেশিয়ান। কঠিনতর ভাষা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে ফারসি, হিব্রু, হিন্দি, রাশিয়ান, সার্বিয়ান/ক্রোয়েশিয়ান, তাই, টার্কিশ, উজবেক ও উর্দু। কঠিনতম ভাষা অর্থাৎ যা আয়ত্ত করতে রীতিমতো বেগ পেতে হয়, সেগুলো হলো- আরবি, চীনা, জাপানি, কোরিয়ান ও পশতু।
বিদেশি ভাষা শেখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ইউটিউবে বা সিনেমায় সেই ভাষা শুনে দেখতে পারেন। যে ভাষা শুনতে মধুর লাগে ও আগ্রহ বাড়ে, সেটি শিখতে পারেন।
অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস প্ল্যাটফর্মে নানা অ্যাপ রয়েছে, যার মাধ্যমে প্রায় বিনামূল্যে বিদেশি ভাষা শেখা সম্ভব। ডুয়োলিঙ্গো, লিঙ্গোডিয়ার, মেমরাইজ, লিঙ্গুয়ালিফট, বাব্বেল, এমনই কয়েকটি অ্যাপের নাম। অ্যাপে ভাষা শেখার অন্যতম সুবিধা হলো, কোনো ভাষা পছন্দ না হলে, সহজেই অন্য ভাষার দিকে ঝোঁকা যায়। এর জন্য টাকা নষ্ট হয় না। মোবাইল গেমিংয়ের ধাঁচে, অডিও-ভিজ্যুয়ালসহ ভাষা শেখাও সম্ভব অ্যাপে।
পড়াশোনা কত দূর এগোল, তা নির্ণয় করতে পরীক্ষা দেওয়া যায়। পরীক্ষা কেন্দ্র কোথায় পড়ে, তা জানাও জরুরি।