ভাঙা ঘর না সেরে প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে মুক্তিযোদ্ধার দান
নিজের ভেঙে যাওয়া ঘর না সারিয়ে তিন মাসের ভাতার ৩৬ হাজার টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দান করেছেন পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস। গতকাল শুক্রবার বিকেলে বেড়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খাদ্যসামগ্রী উপহার বিতরণের সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ইউএনওর মাধ্যমে এ অর্থ দান করেন ওই মুক্তিযোদ্ধা।
জানা যায়, মাত্র ১০০ টাকা দিন হাজিরায় অস্থায়ীভিত্তিতে বেড়া পৌরসভায় পিয়ন পদে চাকরি করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস। বেড়া পৌরসভার নতুন এলাকার বাসিন্দা তিনি। তাঁর বসবাসের ঘর ভেঙে গেছে। দীর্ঘদিন তিনি ভাঙা ঘরে রোদবৃষ্টি উপেক্ষা করে বাস করছিলেন। ঘর মেরামতের জন্য তিন মাসের জমানো ভাতার সেই ৩৬ হাজার টাকা কর্মহীনদের খাদ্য সহায়তায় দান করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস জানান, তাঁর দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেদের মধ্যে এক ছেলে মাছ ধরার কাজ ও অন্য ছেলে গরু বিক্রিতে দালালির কাজ করেন। দুই ছেলের জন্য দুটি ঘর থাকলেও তাঁর ঘরটি ভেঙে গেছে। সেই ঘর মেরামতের জন্য তিন মাসের মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বাবদ পাওয়া ৩৬ হাজার টাকা জমিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতে কর্মহীনদের কষ্ট দেখে তিনি ঘর মেরামতের সিদ্ধান্ত বাদ দেন। শহীদ আব্দুল খালেক স্টেডিয়াম মাঠে বেড়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খাদ্যসামগ্রী উপহার বিতরণ কার্যক্রম চলছিল। অসহায় হতদরিদ্রদের অংশ নিতে দেখে তিনিও টাকা নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু ও বেড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আনাম সিদ্দিকীর কাছে ওই টাকা জমা দেন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন টুকুর বড় ছেলে আসিফ সাম রঞ্জন, বেড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিদ মাহমুদ প্রমুখ।
গতকাল বেড়া পৌর এলাকার স্বল্প আয়ের ও অসহায় ২৫০টি পরিবারের মধ্যে সামাজিক নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে এ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এ ব্যাপারে ইউএনও আসিফ আনাম সিদ্দিকী বলেন, ‘আর্থিকভাবে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস প্রকৃতপক্ষেই মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর দান করা ৩৬ হাজার টাকা শনিবার পাবনার ডিসি স্যারের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে পাঠানো হয়েছে।’