বিদ্যুৎ ও পানির দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে সোমবার বিএনপির মানববন্ধন

বিদ্যুৎ ও ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী ২ মার্চ সোমবার ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশে জেলা সদর ও মহানগরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হবে। ঢাকায় ওই মানববন্ধন হবে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে। বেলা ১১টায় শুরু হয়ে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলবে।
এ ছাড়া বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে আজ শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের বাধার প্রতিবাদে আগামীকাল রোববার ঢাকা মহানগরের থানায় থানায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে।
আজ সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এ ঘোষণা দেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গ্যাসের দাম বাড়ানোর পর গত বৃহস্পতিবার সরকারের নির্দেশে বিইআরসি কর্তৃক গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো সম্পূর্ণরূপে জনস্বার্থ পরিপন্থী। একই সঙ্গে আগামী এপ্রিল মাস থেকে গ্রাহকদের আগের চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি দাম দিয়ে ওয়াসার পানি কিনতে হবে। তবে সেই পানি বিশুদ্ধ হবে কি না, তার কোনো গ্যারান্টি নেই। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ১২ বছরে ১৩ বার ওয়াসার পানির দাম বেড়েছে। এসব গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিজেদের লুটপাটকে অব্যাহত রাখা এবং দেশের মানুষকে শোষণ করে কঙ্কালসার বানানোই সরকারের একমাত্র উদ্দেশ্য।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “মিথ্যা ও সাজানো জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় চতুর্থবারের মতো জামিন চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন চারবারের সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী ও গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়া। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার জামিন আবেদন খারিজ করা হয়েছে। প্রতিহিংসার এই রায়ে সারাজাতি সংক্ষুব্ধ। জনগণ এই আবেদন খারিজ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। অন্যান্য মামলায় দেশনেত্রী জামিনে থাকায় সারা জাতি আশা করেছিল শারীরিকভাবে ভীষণ অসুস্থ বর্ষীয়ান এই দেশনেত্রী উন্নত চিকিৎসার জন্য হলেও জামিন পাবেন। কিন্তু জনগণের সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। জামিন আবেদন খারিজের রায়ে বলা হয়েছে, ‘এই আবেদনে জামিনের কোনো যথার্থ কারণ নেই, তাই জামিনের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হলো।’ অথচ দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় পর্যায়ে। তিনি বিএসএমএমইউতে গত বছরের এপ্রিল থেকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সুতরাং এই আবেদন খারিজ সরকারের প্রতিহিংসাপরায়ণতা ও ফরমায়েসি রায়েরই প্রতিফলন। আদালত দিয়ে প্রতিশোধ গ্রহণের রমরমা রাজনীতির সফলতায় আওয়ামী লীগ উল্লসিত।”
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গত ১২ বছর ধরে বর্তমান নব্য বাকশালী সরকার রাষ্ট্রের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমনভাবে কব্জায় নিয়েছে যে, আজ কোনো প্রতিষ্ঠানই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। প্রতিষ্ঠানগুলো একদলীয় মূঢ় বিশ্বাসের দ্বারা আচ্ছন্ন। আজকে ক্ষমতা ও চাকরির মোহে অনেকেই বিবেক বিসর্জন দিয়ে উচিত-অনুচিতের ধার ধারছেন না। ক্ষমতা দখলকারীদের ভয়ে সর্বত্রই আতঙ্কের বিভীষিকা তৈরি হয়েছে। পৃথিবীর সর্বত্রই উচ্চ আদালত থেকেই ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়, কিন্তু বাংলাদেশে সেটির ব্যতিক্রম ঘটছে। আসলে আওয়ামী সরকারের মধ্যে একটি অশুভ আত্মা আছে, সেই আত্মাটিই এখন রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর আছর করে আছে। যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকে তখন ন্যায়বিচার ও স্বাধীন বিচার বিভাগ একসাথে চলতে পারে না। দলীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ বিচার বিভাগ সারা জাতির জন্য সর্বনাশ বয়ে আনবে।’